যুবলীগনেতার ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, ১৫ আসামি করে মামলা
ময়মনসিংহে যুবলীগনেতার ছুরিকাঘাতে রাকিব হত্যার ঘটনায় ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আজ রোববার (১২ নভেম্বর) করা এ মামলার বাদী হয়েছেন নিহত যুবকের মা হাসি বেগম (৪৫)।
মামলায় যুবলীগনেতা ইয়াসির আরাফাত শাওন (৩৫), তাঁর বড় ভাই পারভেজ (৩৭), ছোট ভাই প্রান্ত (২২), মাজাহারুল ইসলামসহ (২৫) ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত ও অভিযানের স্বার্থে বাকিদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। এরই মধ্যে আসামি মাজাহারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানায় পুলিশ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ চায়না ব্রিজ টোল প্লাজায় ছুরিকাঘাতে আহত হন রাকিব। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজ নির্বাচনি এলাকা ফুলপুরে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে শহরের বাসায় ফিরছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। তাঁর গাড়ি চলে গেলেও টোলপ্লাজায় এসে তাঁর বহরের দুটি মাইক্রোবাস সাব্বির ফিলিং স্টেশনের বিপরীতে একটি ট্রাকের পেছনে আটকা পড়ে। ট্রাকটি সাইড না দেওয়ায় ওভারটেকের সময় যুবলীগ নেতাকর্মীবাহী গাড়ির সঙ্গে ঘষা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে থাকা নেতাকর্মীরা ট্রাকচালককে নামিয়ে মারধর শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় কয়েক যুবক ট্রাকচালককে রক্ষা করতে এগিয়ে যান। তখন ছুরি মেরে রাকিবকে আহত করা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার পর মহানগর যুবলীগের সদস্য ইয়াসির আরাফাত শাওন দৌড়ে মাইক্রোবাসে ওঠে পালিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় সাদেক আলী (৩০) ও শহীদ মিয়া (৪০) নামে আরও দুই চালক আহত হন। তাঁরাও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ময়মনসিংহ শহরের চামড়াগুদাম এলাকার বাসিন্দা ইয়াসির আরাফাত শাওন অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তাঁর দুই ভাই একাধিকবার অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার হন। শাওনের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক আইনেসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। শাওন এলাকায় প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে জানতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারছি না। থানায় মামলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তারা বিস্তারিত বলতে পারবে। তা ছাড়া আমার গাড়ি বহরে কতজনই তো যায়।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘নিহত রাকিবের মা বাদী হয়ে শাওনসহ ১৫ জনের নামে মামলা করেছেন। শাওনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভুইয়া বলেন, ‘জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’