পিতৃহারা সাইমার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন চিফ হুইপ
চলতি বছর এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পাওয়া এতিম সাইমা জামানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন বর্তমান জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। তিনি (সাইমা জামান) মাদারীপুরের শিবচরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পান।
চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর নির্দেশে আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) তাঁদের ঘর মেরামতের জন্য টিন ও নগদ অর্থ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। চিফ হুইপ সাইমা জামানের বাড়িতে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে মিষ্টি ও উপহার পাঠান।
এতিম সাইমা বিধবা চাচির সংসারে থেকে লেখাপড়া করেন। এর আগে চিফ হুইপের ছোট ভাই সাইমার কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী তাঁর সঙ্গে দেখা করে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জানা যায়, জেলার শিবচর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী বন্দরখোলার ইউনিয়নের মল্লিককান্দির মরহুম পান্নু মল্লিকের যমজ সন্তান সাইমা। বাবা পান্নু মল্লিক সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ২০০৯ সালে। তখন সাইমা ও সিয়ামের বয়স তিন বছর। মধ্যবিত্ত পরিবারটির হঠ্যাৎ ভাগ্যের চাক উল্টো ঘুরতে শুরু করে। এর দুই মাস পর একমাত্র চাচা মিজু মল্লিকও মারা যান। সাইমার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন মা চলে যান অন্যের ঘরে। দাদা জহের মল্লিক ও বিধবা চাচি মিরজান বেগম তাঁর ছোট্ট দুই সন্তান ও সাইমাদের যমজ ভাইবোনকে নিয়ে শুরু করেন নতুন জীবন সংগ্রাম। নয় বছর আগে মারা যান বৃদ্ধ দাদাও। তবু থেমে থাকেননি মিরজান বেগম। নিজের সন্তানের মতোই বড় করতে থাকেন সাইমাদেরও। সাইমা রাজারচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৮৯ পান। এরপর ভর্তি হন উপজেলার দত্তপাড়ার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে। চাচাতো ভাই জাবেল মল্লিক ও চাচির সহায়তা ছাড়া তাঁর কলেজে ভর্তি ছিল শুধুই কল্পনা। সাইমা নিজেও শিশু শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ ও কলেজে যাতায়াত খরচ জোগাতেন। অর্থের অভাবে নিয়মিত কলেজে যাওয়াও হতো না তাঁর। ১০ বছর আগে দাদার রেখে যাওয়া ইটের গাথুনির বাড়ির দেয়ালে এখনো দিতে পারেননি পলেস্তারা। ভালো ফল করারও পরও উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন সাইমা ও তাঁর পরিবার।
বিষয়টি চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর নজরে আসে। তাই তিনি জেলা পরিষদ সদস্য আয়শা সিদ্দিকা মুন্নি, শিবচর প্রেসক্লাব সভাপতি এ কে এম নাসিরুল হক ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকারকে দিয়ে মেধাবী সাইমার বাড়িতে মিষ্টি ও উপহার সামগ্রী পাঠান। এ সময় সাইমার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে বৃত্তিসহ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয় চিফ হুইপের পক্ষ থেকে। এদিকে তাঁর নির্দেশনায় আজ সোমবার সকালে সাইমাদের ঘর মেরামতের জন্য টিন ও নগদ অর্থ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।