দগ্ধ হয়ে মা-ছেলের মৃত্যু, নেত্রকোনায় চলছে শোকের মাতম
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় নেত্রকোনার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহত মা-ছেলে হলেন সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউরা ইউনিয়নের বরুনা গ্রামের ফজলুর রহমানের মেয়ে নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তাঁর ছেলে ইয়াসিন (৩)।
আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে ট্রেনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া চারটি মৃতদেহ সকাল ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রেনের তিনটি বগি। আগুনে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি জানার পরই নেত্রকোনার গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারি হয়ে উঠে, চলছে শোকের মাতম।
পারিবারিক সূত্রে স্থানীয়রা জানায়, গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে তারা বেড়ানোর উদ্দেশে গ্রামের বাড়ি বরুনায় এসেছিলেন। সেখান থেকেই গতকাল দিনগত রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের রওনা দিয়েছিলেন ঢাকার উদ্দেশে। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। সঙ্গে ছিলেন নাদিরা আক্তার পপির দুই ছেলে ইয়াসিন (৩) ও ফাহিম (৮) এবং পপির ভাই হাবিবুর রহমান।
জানা যায়, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে সোমবার রাত ১১টায় ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি তেজগাঁ স্টেশন এসে থামলে তখন কিছু যাত্রী সেখান থেকে নেমে যায়। এ সময় তাদের পেছনের ছিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যায়। এরপর পিছনের ছিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় বগি থেকে দৌড়ে হাবিবুর ও ফাহিমসহ অন্য যাত্রীরা নামতে পারলেও ভিতরে আটকা পড়েন ছোট ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা। তাঁরা আর কোনোভাবেই বের হতে পারেননি। পরে ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ বের করে।
নিহত নাদিরার স্বামী মিজানুর রহমান মিজান কারওয়ানবাজারে হার্ডওয়ার দোকানে কাজ করেন। তারা তেজগাঁওয়ে তেজতুরি বাজার এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।