হাজার বছরের পুরোনো মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়ায় সন্ধান পাওয়া প্রাচীন মন্দির খনন করে পাওয়া গেছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। খননকাজ শেষে আজ বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্থানটি।
মন্দিরটি ঠিক কোন সময়কার, সে ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও এটি যে অন্তত এক হাজার ২০০ বছর আগের প্রাক মুসলিম যুগের নিদর্শন, এ ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত। আবার মন্দিরটির নির্মাণ কাঠামো ও ভেতরকার উপাসনালয়গুলোর আকৃতি দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি বৈদ্ধ বা জৈন মন্দিরও হতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে মন্দিরটি এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার বছরের পুরোনো হবে বলে প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা। এসব বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে আরও সময় ও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
২০০৬ সালে মনিরামপুর উপজেলার ভোজগাতি ইউনিয়নে দমদম ঢিবি খনন করে একটি প্রাচীন মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায়। তখনই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানতে পারেন, পাশে খেদাপাড়ায় এ রকম আরও একটি ঢিবি আছে। তখন থেকেই জায়গাটি খননের পরিকল্পনা নেন তাঁরা। এক মাস ধরে ঢিবিটি খনন করে আজ বুধবার দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
৫৭ শতক জায়গার ওপর গড়ে ওঠা ঢিবিটি খননকালে পোড়া ইটের তৈরি বেশ কয়েকটি চওড়া দেওয়াল বেরিয়ে এসেছে। এরমধ্যে পাওয়া গেছে মাটির পাত্রের ভগ্নাংশ, বাটি, পশুর হাড়, লোহার পেরেক প্রভৃতি।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এখনও এই স্থাপনা থেকে বৈদ্ধ বা জৈন মন্দিরের প্রমাণসূচক কোনো নির্দশন পাওয়া যায়নি। এরজন্য আরও খননকাজ ও গবেষণা প্রয়োজন। এখান থেকে পাওয়া নিদর্শনগুলোর কার্বন পরীক্ষা প্রয়োজন। এরপর নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে মন্দিরটি কোন সময়কার এবং কী মন্দির ছিল।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণভাবে মনে করা হয়, যশোর অঞ্চলের ভুমি গঠন প্রক্রিয়া খুব বেশি প্রাচীন নয়। সে কারণে এখানকার সভ্যতার ইতিহাসও খুব বেশি প্রাচীন হবে না। কিন্তু এখানে যেসব নিদর্শন পাওয়া যাচ্ছে, সে অনুযায়ী এটি যদি বৈদ্ধ বা জৈন মন্দির হয়, যশোর অঞ্চলের মানব বসতির ইতিহাস আবার নতুন করে রচনা করতে হবে।