ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে মাস চলত তাদের
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি নতুন ঘটনা নয়। তবে, এবার এমন এক চক্রকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে, যাদের মাস মোটামুটি হেসেখেলেই চলে যেত এই কালোবাজারি করে। র্যাবের দাবি, প্রতি সদস্য মাসে অন্তত ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করতেন টিকিট কালোবাজারি করে।
রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিনগত রাতে ৯ জনকে গ্রেপ্তারের পর আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. মিজান ঢালী (৪৮), মো. সোহেল ঢালী (৩০), মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর, মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৫), সবুর হাওলাদার (৪০), নিউটন বিশ্বাস (৪০)।
খন্দকার আল মঈন জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল টিকিট, আটটি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং ১১ হাজার ৪২২ টাকা তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, টিকিট বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ৫০ ভাগ সহজডটকম ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারম্যানরা পেতেন এবং বাকি ৫০ ভাগ সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী সহযোগীদের মধ্যে ভাগাভাগি হতো। এই অর্থ কখনো তারা নগদ হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিতেন আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতেন। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা উপার্জন করেন বলে জানা যায়। এভাবেই পরস্পরের যোগসাজশে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।
খন্দকার আল মঈন বলেন, কালোবাজারির মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টিকিটগুলো নির্ধারিত মূল্যের চাইতে প্রায় দুই গুণ বেশি মূল্যে বিক্রয় করতেন। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশীদের কাছে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে পাঠাতেন বলে জানা যায়।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি টিকিট কালোবাজারি চক্র উত্তম ও সেলিম সিন্ডিকেটের হোতাসহ ১৪ জন সক্রিয় সদস্যকে এক হাজার ২০০-এর বেশি ট্রেনের টিকিটসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃত কালোবাজারি চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র্যাব।
এরপর নতুন সব তথ্য উঠে এলো, যেখানে দেখা যাচ্ছে—টিকিট কালোবাজারি করে অনেকে তাদের মাসের খরচ দিব্বি উঠিয়ে নিচ্ছে।