স্বামীকে হত্যায় স্ত্রী ও তার প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
গোপালগঞ্জে স্বামী কাঠমিস্ত্রি কমলেশ বাড়ৈ (৪৫) হত্যা মামলায় স্ত্রী সুবর্ণা বাড়ৈ (৩৮) ও তার প্রেমিক মনমথ বাড়ৈকে (৪০) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
কমলেশ বাড়ৈর স্ত্রী সুবর্ণা বাড়ৈ (৩৮) ও তার পরকীয়া প্রেমিক মনমথ বাড়ৈ (৪০) গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের তালপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. মাহবুবুর রহমান জানান, কমলেশ বাড়ৈ কাঠমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা চালাতেন। তার স্ত্রী গৃহবধূ সুবর্ণা বাড়ৈ একই গ্রামের মনমথ বাড়ৈর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি স্বামী কমলেশ বাড়ৈ জানতে পারেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শুরু হয়। এজন্য কমলেশকে হত্যার পরিকল্পনার ছক আকেন স্ত্রী সুবর্ণা ও সুবর্ণার প্রেমিক মনমথ বাড়ৈ।
২০২০ সালের ২ মার্চ বাগেরহাটের ফকিরহাট থেকে ২০টি ঘুমের ওষুধ কেনেন। এরপর সেগুলো প্রেমিকা সুবর্ণাকে দেন। সুবর্ণা ওই রাতেই তরকারির ভেতর ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে কমলেশকে খাওয়ায়। কমলেশ অচেতন হয়ে পড়লে মনমথ বাড়ৈ ও সুবর্ণা বাড়ৈ দুজনে মিলে কমলেশ বাড়ৈর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর দুজনে কমলেশের মরদেহটি বস্তায় করে মনমথ বাড়ৈর তালপুকুরিয়া গ্রামের ভাড়া করা মাছের ঘেরপাড়ে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে চাপা দেয়।
এ ঘটনায় কমলেশের ভাই রমেশ বাড়ৈ বাদী হয়ে সুবর্ণা ও মনমথকে আসামি করে গত ২৬ মে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৭ মে সুবর্ণা ও মনমথকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোটালীপাড়া থানার এসআই মো. আব্দুল করিম তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে সুবর্ণা ও মনমথ বাড়ৈর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।
শুনানি ও স্বাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সুবর্ণা ও মনমথ বাড়ৈকে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক মাকসুদুর রহমান।