ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক আহত
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এবং আজ বুধবার (৮ মে) সকালে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আগানগর গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আগানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সরুল্লার বাড়ি এবং উত্তরপাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারী বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। পরে আহতদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৪ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার সরুল্লার বাড়ি এবং উত্তরপাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারী বাড়ির লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আনন্দ বাজারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার নিয়েও দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলমান বেশ কয়েক বছর ধরে।
এরই মধ্যে গত ২২ এপ্রিল জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অতিথি প্যানেলের নাম নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। সে সময় স্থানীয় নেতারা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।
এরপর গতকাল বিকেলে ড্রেজারের পাইপ চুরির বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাগবিতণ্ড হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে দুই পক্ষের অর্ধশত লোকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আজ বুধবার (৮ মে) সকালে বিবদমান দুই পক্ষ এবং আত্মীয়তার সূত্রে গ্রামের আরও কয়েকটি বংশ উভয়পক্ষের সঙ্গে যোগ দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু আহত হয়।
খবর পেয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এলে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রওশন আরা রিপা এবং সোয়েব রহমান জানান, গতকাল রাতে ৩০ জন এবং আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক আহত রোগী এখানে আসে। এদেরমধ্যে গুরুতর আহত ১৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। পরবর্তী অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।