এক অন্যরকম ঢাকা!
ঢাকার সড়কে চিরচেনা যানজট নেই। নেই বেশি মানুষের আনাগোনা। হর্নের শব্দ নেই। গাড়ি-ঘোড়ার চাপও নেই। এ যেন এক উন্মুক্ত ঢাকা! এ ধরনের দৃশ্য রাজধানীতে কেবল ঈদের সময়ই দেখা যায়। এক অন্যরকম ঢাকা!
নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে রাজধানীর পুরান ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলছিলেন, ‘দুই ঈদের সময় এতো ভালো লাগে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। যেন ঢাকা প্রাণ ফিরে পেয়েছে।’
রাজধানীর টিএসসিতে বসে চা খাচ্ছিলেন তানভির আহম্মেদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনিও পুরান ঢাকার বাসিন্দা। মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে তাল না মিলিয়ে তিনি বলছেন, ‘ফাঁকা ঢাকা ভালো লাগে না। যানজট থাকবে। বাসের দরজায় যাত্রী ঝুলবে। সবখানে মানুষ গিজগিজ করবে। এই হলো আমার প্রকৃত ঢাকার চিত্র। ফাঁকা ঢাকা তো আমার ঢাকাই না! এ যেন অন্য ঢাকা।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, পশু জবাই করতে গিয়ে দা-ছুরির আঘাতে আহত অনেকেই এসেছেন জরুরি বিভাগে। বেলা ১১টা পর্যন্ত ৫২ জন রোগী এসেছে পশু জবাই করতে গিয়ে রক্তাক্ত হয়ে। ঢামেকের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অরিফ হোসেন বলছিলেন, ‘এ ধরনের দৃশ্য কোরবানির ঈদের দিন ছাড়া দেখা যায় না।’
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে কর্মরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের এক পুলিশ সদস্য বললেন, ‘চিরচেনা সেই যানজট নেই। বেশি মানুষের ভিড় নেই। গাড়ি নেই। আমরা দায়িত্ব পালন করছি এক অন্যরকম ফাঁকা ঢাকায়।’
রাজধানীর হাতিরঝিলে গিয়ে দেখা গেল, কোনো কোলাহল নেই। কপোত-কপোতি কিংবা প্রেমিক-প্রেমিকাদের পাশাপাশি বসে থাকার দৃশ্য নেই। হাতিরঝিলের এফডিসির গেটের ভেতরে পাওয়া গেল এক চা-বিড়ি-পান বিক্রেতাকে। শহিদুল নামের ওই বিক্রেতা বললেন, ‘ভেবেছিলাম ভালো বিক্রি হবে। কিন্তু, মানুষজনই নেই। বিক্রি কম।’
গত ১৩ জুন থেকে রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। মূলত সেদিন থেকেই ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করে। আগামীকাল থেকে ঈদ উদযাপনে যাওয়া গ্রামমুখী কিছু কিছু মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করবেন। আগামী শনিবার-রোববার থেকে আবারও ঢাকা ফিরবে তার চিরচেনা রূপে।