চিড়িয়াখানায় মানুষের ঢল
রাজধানীর চিড়িয়াখানায় হাজারও মানুষের ঢল নেমেছে। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা ছিল লোকারণ্য। সামনেও যেমন, ভেতরে ছিল তেমন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল বেশি। ঈদের ছুটিতে তারা ঢাকায় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে এসেছেন। চিড়িয়াখানায় আজ সব বয়সীদের পাশাপাশি ছিল শিশুরাও। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেও ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
রহমান মিয়া নামের এক দর্শনার্থী বলেন, এবার ঈদে ঢাকায় করছি। পরিবারিক কারণে গ্রামে যেতে পারিনি। তাই পরিবার নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছি। তিনি বলেন, ঢাকায় বিনোদনের স্থানের খুব অভাব। এক সময় শিশুপার্ক ছিল, গুলশান-সায়দাবাদে ওন্ডারল্যান্ড ছিল। এখন তেমন কিছুই নেই। তা ছাড়া যানজটের কারণেও বাইরে বের হওয়া কঠিন। ফাঁকা ঢাকার কারণে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুন্দর পরিবেশ—পশু ও পাখি দেখার জন্য এখানে এসেছি।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মফিজুল ইসলাম বলেন, ঈদের সময় ঢাকায় বেড়াতে এসেছি। নারায়ণগঞ্জ থেকে এখন ঢাকার মিরপুরে আসা সহজ, তাই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য এখানে এসেছি। এখানে অনেক পশুপাখি রয়েছে। পরিবারের সবাই দারুণ উপভোগ করছে। তিনি বলেন, আগামীকাল ফ্যান্টাসি কিংডমে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাব। তিনি আরও বলেন, শিশুদের বাহিরের পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করতে ও পশুপাখি চেনাতে এখানে নিয়ে এসেছি। সব সময় তো ঘরের মধ্য আবদ্ধ থাকে। তাই এসময় শিশুরা চিড়িয়াখানায় এসে পশুপাশি দেখে খুব উচ্ছ্বসিত হচ্ছে।
বেসরকারি চাকুরীজীবী রায়হান বলেন, ছোট্ট মেয়ে অনেক পশুপাশি বইতে ও টিভিতে দেখে। কিন্তু, কখনও বাস্তবে দেখানো হয়নি। তাই পরিবারের সঙ্গে একটু একান্ত সময় উপভোগ করার জন্য ও বাচ্চাদের বিনোদন দেওয়ার লক্ষে চিড়িয়াখানায় নিয়ে এসেছি। এখানে অনেক ধরনের পশু-পাখি রয়েছে। তবে, ভ্যাপসা গরমের কারণে শিশুদের অস্থির লাগছিল। তারপরও এত পশুপাশি একবারে দেখার পরে তারাও আনন্দিত।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, চিড়িয়াখানায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও অনেকে দর্শনার্থী শেষ সময়েও প্রবেশ করছেন।
চিড়িয়াখানা পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গতকাল দর্শনার্থী কম ছিল। আজও আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় কম। ভ্যাপসা গরম, এ কারণে দর্শনার্থী কম হতে পারে। তবে, আগামী শনিবার পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় মানুষের চাপ থাকতে পারে। আজ প্রায় ৮০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে।’ কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ, ভালুক, কুমির, হরিণ, হাতি, ঘোড়া, গাধা, সাপসহ এখানে ১৩৭ প্রজাতির তিন হাজার ৪০০ পশুপাখি রয়েছে।