চট্টগ্রামে অগ্নিকাণ্ডে দুই বন্ধুর মৃত্যু, থাকবেন পাশাপাশি কবরে
শাহাদত হোসেন শাহেদ (২১) ও ইসমাইল হোসেন ইকবাল (২০) অগ্নিকাণ্ডের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজ উদ্দিন বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় ঘটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের কুতুবপাড়ার বাসিন্দা তাঁরা। লেখাপড়া, খেলাধুলা, ঘুরে বেড়ানো একই সাথে। থাকতেনন চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারে। পৃথক দোকানে চাকরি করতেন তাঁরা। শুক্রবার মার্কেট বন্ধ, তাই রাতটি বন্ধুর সঙ্গে কাটাতে সাহেদের বাসায় যান ইকবাল। দুই বন্ধু একই বাসায় গল্প করে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমন্ত অবস্থায় ঘটে অগ্নিকাণ্ড। অগ্নিকাণ্ডের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যান দুজনই।
নিহত ইকবাল ও সাহেদকে পাশাপাশি কবর দেওয়ার জন্য কবর তৈরি করেছে এলাকাবাসী। দুই বন্ধুর মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম। কেহ কবর কুড়ছেন, আর কেহ নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিচ্ছে।
আজ দুপুরে কুতুবপাডায় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। নিহত দুজনের আরেক বন্ধু ইকবালের বন্ধু আরোব বলেন, ইকবাল ও সাহেদ আমার বন্ধু। তারা দুজনই অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিল। গত কোরবানির ঈদে বাড়িতে এসেছিল। অনেক বন্ধু মিলে কক্সবাজার বেড়াতে যাই। সেখান থেকে ফিরে গত শনিবার তারা চাকরিস্থলে চলে যায়। কথা ছিল ছুটি পেলেই গ্রামে আসবে। কিন্তু তাদের আর ছুটির প্রয়োজন নেই। শেষ বারের মতো গ্রামে এসেছে তারা লাশ হয়ে।’
কুতুবপাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ হোসেনের তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট ইকবাল। বড় ভাই ওসমান থাকেন সৌদি আরবে। এলাকায় থাকলে খারাপ ছেলেদের পাল্লায় পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় বড় ভাই ওসমানের পরামর্শে ইকবালকে চাকরিতে পাঠান বাবা সৈয়দ হোসেন।
নিহত সাহেদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাহেদের মা খুরশিদা বেগম পুত্রশোকে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন। খবর পেয়ে আসা স্বজনরা তাঁকে বুঝাচ্ছেন। সাহেদ ওই এলাকার ভেট্টা মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, রাত আনুমানিক দেড়টার সময় রিয়াজ উদ্দিন বাজারের একটি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে পাশের অনেক মার্কেটের লোকজনও বন্দি হয়ে পড়ে। সেখানে পাঁচ তলা একটি ভবনে ধোঁয়ার কারণে দম বন্দ হয়ে ইকবাল, সাহেদ ও রিদুয়ান নামে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম বলেন, রিয়াজউদ্দিন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় পাঁচতলা ভবনের একটি বাসা থেকে তিন ব্যক্তি বের হতে পারেননি। ধোঁয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।