বখাটেদের কাছে জিম্মি দুই শতাধিক জেলে পরিবার
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সন্ত্রাসী, মাদকাসক্ত ও বখাটেদের কাছে জিম্মি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে মৎস্যজীবী দুই শতাধিক হিন্দু পরিবার। ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে তাদের সন্তানরা যেতে পারছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তাদের এই চরম অবস্থার কথা জানাতে পারছে না জনপ্রতিনিধি বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছেও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনদিক থেকে পানি বেষ্টিত উপজেলার খালিশা গ্রামটিতে বংশপরম্পরায় বাস করেন জেলে সম্প্রদায়ের দুই শতাধিক পরিবার। তাদের প্রধান পেশা মাছ শিকার ও বিক্রি। বাড়ির পুরুষরা যখন কাজে বের হয় তখন অনেক ঘরে বাইরে থেকে তালা দেওয়া থাকে। যদিও ঘরের ভেতরে থাকে বাড়ির নারী সদস্যরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাড়ির পুরুষরা ভোরবেলা কাজে চলে যায়। এরপর আশেপাশের এলাকার সন্ত্রাসী, মাদকাসক্ত আর বখাটেরা তাদের বাড়িতে ঢুকে মাদক সেবন করে। নারী নিয়ে এসেও ঘরের সদস্যদের বের করে দিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। মাদকাসক্তরা বাড়ির মেয়েদেরও বাজে ইঙ্গিত করে, কখনও আবার গায়ে হাত দেয়। যাওয়ার সময় ঘরে থাকা টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।
এছাড়াও গ্রামের দক্ষিণ দিকে ঝোঁপের আড়ালে নিয়মিত বসে জুয়ার আসর। এসব বখাটেরা দিনে কার ঘরে কি আছে তা দেখে যায়, রাতে সেসব ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সব লুট করে নিয়ে যায়। এমন অত্যাচারে বাড়ির বয়স্ক সদস্যরা তাদের বউ ও মেয়েদের ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। কিন্তু এতেও মুক্তি মেলে না। অনেক সময় জোর করে তালা খুলতে বাধ্য করা হয়। তা না হলে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
ছয়সূতি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে থানায় কথা বলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার জাহান বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’