ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এতে ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। তবে, সিলোনিয়া নদীর বাঁধ আবারও ভেঙে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। এতে দুই উপজেলার অন্তত চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হন। বসতবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। ইতোমধ্যে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০টি অংশে ভাঙন হয়েছে।  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামতে শুরু করলেও বেড়িবাঁধের ভাঙা স্থান দিয়ে প্রবেশ করা পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত দুই দিনে মুহুরী-সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০টি স্থানে ভেঙেছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে নতুন করে আর বাঁধ ভাঙার সম্ভাবনা নেই। এ ছাড়া পানি কমলে ভাঙন স্থলের মেরামত কাজ শুরু হবে। 

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভুঁইয়া বলেন, ‘ফুলগাজীর পাঁচটি ইউনিয়নের ৩৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দুই হাজার  পরিবারের মানুষ পানিবন্দি আছে। ঘর থেকে পানি নামলেও কৃষি জমি ও রাস্তায় পানি রয়েছে। পানি নিচের দিকে গড়াচ্ছে, ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব পানিবন্দি মানুষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।’ 

পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ‘পরশুরাম উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।’

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের বীজতলা, গ্রীষ্মকালীন সবজি ও পুকুরের মাছ। পানিতে আমনের বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ১৬ হেক্টর। সাড়ে সাত হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজির ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। মৎস বিভাগের তথ্যমতে, দুই উপজেলায় ৭০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

গত সোমবার রাতে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর ১০টি স্থানে ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর ৪৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব উপজেলার সব পরীক্ষাকেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা চলমান আছে। বন্যার কারণে গত ২ জুলাই দুই উপজেলায় এইচএসসির বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল।