মহিলা লীগনেত্রী বেবি ঋণ খেলাপির মামলায় গ্রেপ্তার
পটুয়াখালী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা বেবিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোনালী ব্যাংকের প্রায় ৯ কোটি টাকা ঋণখেলাপির মামলায় আজ বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে শহরের ফায়ার সার্ভিস এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়।
পুলিশ অর্থ ঋণ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বলে গ্রেপ্তারের কথা জানালেও বেবি নিজেকে জামিনে রয়েছেন বলে জানান। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে পটুয়াখালী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জসিম নিশ্চিত করেছেন।
পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান জানান, ১৯৮৫ সালে পটুয়াখালী বিসিক এলাকায় মেসার্স পটুয়াখালী টেক্সটাইল মিল নামে একটি কোম্পানি খুলে সোনালী ব্যাংক থেকে দুই কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন সিরাজুল ইসলাম খান। ওই কোম্পানির অর্ধেক শেয়ার নিজ নামে রেখে কোম্পানির পরিচালক পদ দিয়ে ২৫ ভাগ করে শেয়ার দেখানো হয় তাঁর স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা বেবি এবং হামিদুল হক নামে এক ব্যক্তির নামে। টেক্সটাইল মিলটি কিছুদিন চালু থাকার পর ১৯৯৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের বকেয়া দাঁড়ায় আট কোটি ৩৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এরপর সিরাজুল ইসলাম এবং হামিদুল হক মারা যান। ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় ব্যাংক ম্যানেজার বাদী হয়ে পটুয়াখালী অর্থ ঋণ আদালতে জাকিয়া সুলতানা বেবিকে আসামি করে ২০০৪ সালে একটি মামলা করা হয়।
ম্যানেজার আরও জানান, ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সুদে-আসলে বর্তমান লেজার স্থিতি অনুযায়ী এ পর্যন্ত সুদ মওকুফের পর জাকিয়া সুলতানা বেবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর কাছে ব্যাংকের বকেয়া পাওনা দাঁড়ায় প্রায় ৯ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। গত মে মাসে জাকিয়া সুলতানা বেবি ১৯ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের কাছে সুদ মওকুফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড সভা তিন কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত না মেনে বেবি প্রতিনিয়ত খেলাপি তালিকার শীর্ষ ওঠেন। তাই ব্যাংকের হস্তক্ষেপে আজ তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পটুয়াখালী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদ জানান, বেবিকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।