‘স্বামীর মৃত্যুতে সন্তানদের নিয়া নিঃস্ব হয়ে গেলাম’
‘স্বামীর মৃত্যুতে সন্তানদের নিয়া নিঃস্ব হয়ে গেলাম। পরিবারে আর কেউ উপার্জনের মানুষ নাই। ছেলে-মেয়েদের দেখাশোনার কেউ রইলো না। ছোট সন্তানটি বাবা বাবা বলে কান্না করে। এখন আমাদের সংসার চলবে কীভাবে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন কোটাসংস্কার আন্দোলনে নিহত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের গাড়িচালক কামাল হোসেন সবুজের (৩৮) স্ত্রী সাদিয়া বেগম রানু।
রানু আরও বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঝালকাঠি শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম। এখন আমাদের থাকার জায়গা নেই। আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই।’
কামাল হোসেনের বড় ছেলে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া সামিউল ইসলাম (১৩) বলেন, ‘আমাদের তিন ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার চলত বাবার আয়ে। বাবা নেই। আমাদের খরচ চালাবে কে? আমরা অসহায় হয়ে গেলাম।’
জানা গেছে, গত ২০ জুলাই সকালে বাড্ডার শাহজাদপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে নাস্তা খেতে বের হয়েছিলেন কামাল হোসেন সবুজ। এসময় তার মাথায় গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই এর গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঝালকাঠি সদরের বিনয়কাঠি ইউনিয়নের বালকদিয়া গ্রামের মনসুর হাওলাদারের ছেলে কামাল হোসেন। তার দুই ছেলে ও তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ২২ জুলাই সকালে ঝালকাঠি সদরের আগরবাড়ি এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে কামাল হোসেনকে দাফন করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে আগরবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কামালের অবুঝ ছোট ছেলেটা বাবার চ্যানেল আইয়ের পরিচয়পত্রটি গলায় ঝুলিয়ে মায়ের পাশে বসে আছে। শিশুটি বার বার বলছে বাবা ফিরে আসবে। অন্য দুই ভাই-বোনও পাশে বসে কান্না করছে।
কামালের স্ত্রীর ভাই রিপন হাওলাদারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে ঢাকায় গিয়ে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে দাফন করা হয়। আমার বোনটি বিধবা হয়ে গেল।’