দুষ্কৃতকারীদের কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দিবেন না : শিল্পমন্ত্রী
দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করতে বেশি সময় লাগবে না। তারা বিদেশ থেকে আসেনি। তারা আমাদের গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহলায় লুকিয়ে আছে। তাদের কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দিবেন না। তাদের পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় এ আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, নরসিংদী কারাগারে যারা এই তাণ্ডব চালিয়েছে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সরকার তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি নিশ্চিত করবে। তা ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার বদ্ধ পরিকর। এর জন্য সরকার দেশের সব এজেন্সিকে ব্যবহার করেছে। বিশেষ করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ বাহিনীসহ সরকারের প্রতিটি সেক্টরকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করছে।
সভায় মন্ত্রী দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তারে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীরপ্রতীক, পলাশের সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান, শিবপুরের সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মাসুদা সিদ্দিকী রোজী, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে এবং সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
গত শুক্রবার বিকেলে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। ওই সময় তারা কারাগারের ফটক ভেঙে জেল সুপার, জেলারের অফিস কক্ষ, পুলিশ ব্যারাকসহ পুরো জেলখানায় অগ্নি সংযোগ করে। পরে তারা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র, গুলি ও খাবার লুট করে। ওই সময় জেলে থাকা জঙ্গি সংগঠনের ৯ সদস্যসহ ৮২৬ আসামি পালায়। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ চলে রাত ১০টার পর্যন্ত। ওই সময় কারাগারের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এদিকে কারাগার থেকে লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্র, সাড়ে আট হাজার গুলির মধ্যে ৩৯টি অস্ত্র, এক হাজার ৮৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে লুট হওয়া অস্ত্রের সন্ধানদাতাকে ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পুলিশ। এ ছাড়া জেল থেকে পলাতক ২৮৯ বন্দি স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
অন্যদিকে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় দুটি মামলা ও সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ছয়টিসহ মোট আটটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে হামলার সময় কারাগারের দায়িত্বে থাকা জেলার মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় দুটি মামলা করেছেন। বিভিন্ন থানার পুলিশ বাদী হয়ে আরও ছয়টি মামলা করে।