রিমান্ড শেষে কারাগারে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর
রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মদ এই আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আবু সাঈদ মিয়া নুরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই প্রতিদিনের মতো সেতু ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথারীতি অফিসের কার্যক্রম করতে থাকেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জন আসামি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতা করার লক্ষ্যে বেআইনিভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে কর্মকর্তাদের সামনে এসে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। সেতু ভবনের জ্যেষ্ঠ সচিবসহ কর্মকর্তাদের পদ পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে হুমকি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক ভীতি সৃষ্টি করে। সেতু ভবন লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।
একপর্যায়ে আসামিরা অফিসের মূল ফটক ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে। সেতু ভবনের নিচ তলায় ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যানটিন, গাড়িচালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কর্নার, জেনারেটরস কক্ষসহ মূল ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটায়। এ সময়ে সেতু ভবনের জ্যেষ্ঠ সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরাসহ ভেতরে থাকা অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মী আসামিদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে আসামিরা তাদের মারধর করে ও গুরুতর জখম করে।
আরও জানা গেছে, পরবর্তী সময় আসামিরা নিচ তলার আনসার শেড, ড্রাইভার শেড থেকে চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র এবং সেতু ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচতলা হতে ১১ তলা পর্যন্ত অফিসে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইল কেবিনেট, এসি, ফ্যান, পানির ফিল্টার, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামাল সামগ্রী চুরি করে। প্রতি ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। আসামিদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগে সেতু ভবনের নিচতলা হতে ১২ তলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্ষিত পদ্মা সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুলেন সড়ক টানেল-প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প সেতু বিভাগের আওতাধীন সব প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি, এফডিআর ইনস্ট্রুমেন্ট, টেন্ডার সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ইন্টারনেট সার্ভার, শতাধিক কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, জেনারেটর, ফায়ার এক্সটিংগুইশারসহ যাবতীয় নথিপত্র এবং সেতু ভবনের পার্কিংয়ে তা থাকা ৩২টি জিপ গাড়ি, ৯টি পিকআপ, সাতটি মাইক্রোবাস, একটি মিনিবাস, পাঁচটি মোটরসাইকেল, একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেয়। ভস্মীভূত হয় আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকার মালামাল। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মারফত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইউনিটকে জানানো হয়। পরে এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেন।