নোয়াখালীতে চার পুলিশসহ নিহত ৭, ওসি গুলিবিদ্ধ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চার পুলিশসহ অন্তত সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ৩৬ জন। তবে তাৎক্ষণিক সব নিহতের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষের এসব ঘটনা ঘটে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকরা সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকায় জড়ো হয়ে আনন্দ-উল্লাস করতে থাকে। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আনন্দ মিছিল থেকে কয়েকজন সোনাইমুড়ী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। এরপর উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করে হামলা-ভাঙচুর চালালে পুলিশের পাল্টা গুলিতে অনেকে আহত হন। উত্তেজিত জনতা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আরও অনেকে আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৩৪ জনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৩৭ জন গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে তিনজনতে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। বর্তমানে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত চার পুলিশ সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে সেখানে ১৩ জন পুলিশ সদস্য ছিল। এর মধ্যে চারজনকে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনজন পুলিশকে জবাই করে হত্যা হয়েছে। ধোঁয়ায় ভবন ছেয়ে আছে। পুরো ভবন রিকভারি (পুনরুদ্ধার) করার পরে প্রকৃত বিষয়টি বোঝা যাবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে এসপি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শুনতেছি সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনজন, কেউ বলছে দুজন মারা গেছে।’
বেঁচে যাওয়া এক পুলিশ সদস্যের বরাত দিয়ে এসপি বলেন, ‘প্রথমে আন্দোলনকারীরা আক্রমণ করে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি করে। নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. নাছির, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বাছির, কনস্টেবল মোশারফ ও গিয়াস। ধোঁয়ার কারণে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না।’
সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিনের শরীরে পাঁচটি গুলি লেগেছে বলেও জানান এসপি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
অপরদিকে, বিকেল ৫টার দিকে এক দল বিক্ষোভকারী আনন্দমিছিল নিয়ে চাটখিল থানায় হামলা চালান। থানা ভবনের ভেতরে প্রায় প্রতিটি কক্ষে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়।