বান্দরবানের বাইশারীতে ভারি বর্ষণ-পাহাড়ি ঢলে ৮ গ্রাম প্লাবিত
বান্দবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আট গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার শতাধিক পরিবার। আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভোর রাত থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হলে ইউনিয়নের আটটি গ্রামে পানিবন্দি হয়ে পড়ে চার শতাধিক পরিবার।
পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে গরু, ছাগল, হাস মুরগি। তলিয়ে গেছে ফসল, বীজতলা। পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় দক্ষিণ বাইশারী গ্রামের নুরুল আলমের বসতবাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি।
দক্ষিণ বাইশারী গ্রামের নুরুল আলম জানান, ভোররাতের এক ঘণ্টা বৃষ্টিতে পুরো গ্রাম ডুবে যায়।
একই গ্রামের বাসিন্দা মো. জুনাইদ জানান তার বসত ঘরের ভিতরে প্রচুর পানি। হাস মুরগি পানিতে ভেসে গেছে। একটি গরুও পানিতে ভেসে গিয়ে মারা যায়।
অপর দিকে বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে পানিবন্দি মানুষকে সহযোগিতা এবং রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
বাইশারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনিরুল হক মনু বলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাবু সাচিং প্রু জেরীর নির্দেশনায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং পানিবন্দি মানুষদের রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল করিম বান্টু ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে তিন হাজার মানুষের জন্য দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামির বাইশারী ইউনিয়ন শাখার পক্ষ থেকেও পানিবন্দি মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াত নেতা মো. রফিক বশরী।
বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম জানান, এত পানি তিনি আগে আর দেখেননি। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সার্বিক বিষয় অবহিত করেছেন এবং পানিবন্দি লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায় বাইশারী ইউনিয়নের আটটি গ্রামের চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলো হলো পশ্চিম বাইশারী, দক্ষিণ বাইশারী, মধ্যম বাইশারী, পূর্ব বাইশারী, নারিচ বুনিয়া, করলিয়ামুরা, গোদামপাড়াসহ বাইশারী বাজারের প্রায় ১২টি দোকানে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিবলির মুদি দোকান, বিশাল এন্টারপ্রাইজ, নুরুল আলম রাইটারের দোকান।
এ ছাড়া রাস্তাঘাট ও খালের বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি মানুষের জন্য প্রাথমিকভাবে এক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।