এবার কক্সবাজারে চিকিৎসককে মারধর, বন্ধ সেবা কার্যক্রম
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সিসিইউতে ভর্তি এক রোগীর মৃত্যুর জেরে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। এ সময় আইসিইউ, সিসিইউসহ হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তর করা না হলে কাজে ফিরবেন না ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীরা।
গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাত ১টায় সিসিউতে ভর্তি থাকা শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার আবদুল আজিজ নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়। স্বজনদের অভিযোগ, ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করার পরই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে হাসপাতালের ভেতরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্বজনরা। একপর্যায়ে তারা কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সজিব কাজীকে মারধর শুরু করে। চালানো হয় ভাঙচুর।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহিদুল মোস্তফা জানিয়েছেন, সংকটাপন্ন রোগীকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরও কয়েকজন যুবক চিকিৎসককে মারধর করে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। ভাঙচুর করে আইসিইউ, সিসিইউসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড। নিয়ে যাওয়া হয় নানা সরঞ্জামও। আহত চিকিৎসক আশঙ্কজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ঘটনার একটি ফুটেজে দেখা যায়, চার যুবক চিকিৎসক সজীবকে মারধর করছে। একপর্যায়ে চিকিৎসক জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে যান। ফুটেজে হামলাকারী দুই যুবককে ইতোমধ্যে শনাক্তও করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আসিফ ও মেহেদী নামের এই দুজন মারা যাওয়া রোগীর স্বজন নয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জরুরি বিভাগে সেবা সচল থাকলেও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেটিও বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছে চিকিৎসক-ওয়ার্ডকর্মীসহ হাসপাতালটির স্টাফরা।
ওয়ার্ড মাস্টার নুরুল হুদা বলেন, যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে কোনো স্টাফই কাজে ফিরবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নিশ্চিত করতে হবে। কথায় কথায় চিকিৎসকসহ স্টাফদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাতে সবাই নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। তার পরই সেবা দেওয়া হবে।
ওয়ার্ড কর্মীদের নেতা শোভন দাশ বলেন, ‘গেল তিন মাস কোনো ধরনের বেতন পাইনি। তার পরও আমরা সেবা নিশ্চিত করেছি। কিন্তু এখন নিজের ওপর হামলা হচ্ছে। নিরাপত্তা যদি না থাকে তাহলে কীভাবে কাজ করব আমরা?’
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (প্রশাসন) ডা. জি. আর. এম জিহাদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানে আলোচনায় বসেছে চিকিৎসক-নার্স ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈঠকটিতে সিদ্ধান্ত না এলে অনির্দিষ্টকালের কর্ম-বিরতিতে যেতে পারে হাসপাতালের দায়িত্বরত স্টাফরা।