ভারতের সঙ্গে ‘বরফ গলতে শুরু করেছে’ : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কে ‘বরফ গলতে শুরু করেছে’।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিএনপির মহাসচিব এ কথা বলেন।
এএনআইকে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার বিএনপি কার্যালয়ে এসে বৈঠক করাটা দুই দেশের জন্য অনেক ইতিবাচক দিকের দ্বার উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশে গত নির্বাচনের পর থেকে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে একটি প্রশ্ন ছিল। তবে এবার হাইকমিশনারের আমাদের কার্যালয়ে আসাটা অবশ্যই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়েছে। বরফ গলতে শুরু করেছে।’
এএনআই প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে গত ১৫ বছরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের হওয়া কিছু উদ্যোগ ও চুক্তির বিষয়ে বিএনপি সমালোচনা করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠকটিকে সম্পর্কের বরফগলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল এএনআইকে বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের সব সময় খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। অবশ্যই এটা ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে বাঁকবদলের একটি। তাঁর দল ভারতকে আশ্বস্ত করেছে যে তারা ক্ষমতায় এলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করার সুযোগ দেবে না।’
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা পানিবণ্টন, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ঘাটতি এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। একই সঙ্গে ভারতের প্রধান বিষয় হলো নিরাপত্তা সমস্যা। আমরা আশ্বস্ত করেছি যে আমরা যদি ক্ষমতায় থাকি তাহলে আমরা এটা নিশ্চিত করব যে এ দেশের মাটি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা ব্যবহৃত হবে না।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অতীতে সম্পর্ক ভালো ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল এএনআইকে বলেন, ‘কিন্তু বিএনপি ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কিছু ভুল–বোঝাবুঝি ছিল। আমি মনে করি, বরফ গলতে শুরু করেছে। আমি আশা করি, এবার এটা (সম্পর্ক) আরও ভালো হবে। তারা (ভারত) আমাদের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবে। আমরা এটা বিশেষ করে আবারও বলেছি যে ভারতের এ দেশের মানুষের মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। তাদের সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখা উচিত নয়। তাদের উচিত জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক উন্নয়ন করা।’
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে বলে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে বলে আমি মনে করি না। প্রতিবার ক্ষমতার পরিবর্তনের পর কিছু সমস্যা হয়। এসব সমস্যা রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক নয়। কিছু ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর সবই রাজনৈতিক কারণে, সাম্প্রদায়িক কারণে নয়। তবে আমরা দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে খুবই সতর্ক। বিশেষ করে পূজার আগে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে দেশজুড়ে আমাদের সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি।’