কম খরচে জাহাজে হজযাত্রী পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা
কম খরচে যেন সাধারণ মানুষ হজ করতে জাহাজে সৌদি আরবে যেতে পারেন, সেজন্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে মাদারীপুরের শিবচরের জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসায় সীরাতুন্নবী মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘এ দেশের সাধারণ মানুষ যাতে কম খরচে হজ করতে পারে, সে ব্যাপারে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। স্বাধীনতা-পূর্ব এবং স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে হাজিরা জাহাজে করে হজ করতে যেতেন। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজে করে হাজীদের হজে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি। সৌদি সরকারের এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা জাহাজ কোম্পানির মালিকদের সঙ্গেও আলাপ করেছি। এ বছর আমরা জাহাজে পাঠাতে পারি কিনা, চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্তত আমরা একটা দুয়ার খুলে দিতে চাই। এ দেশের সাধারণ মানুষ যাতে কম খরচে হজ করতে পারেন।’
এ সময় ড. খালিদ হোসেন বলেন, ‘হাজিদের সার্বিক সহযোগিতার বিষয়ে সৌদি সরকার আন্তরিক রয়েছে। আমার আপাতত দুটি প্যাকেজ চালু করব। স্বল্প খরচে কাবা শরীফ ও মদিনা শরীফ থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে এবং আরেকটা একটু দূরে। হাজিরা হেঁটেও যেন আসতে পারে। তাছাড়া বাংলাদেশ বিমানে খরচ বেশি। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি, যাতে খরচ কমানো যায়। আমরা আশাবাদী, হজ প্যাকেজগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে করতে পারব।’
কওমি মাদরাসার সনদকে কীভাবে কার্যকর করা যায় সে বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘কওমি মাদরাসা থেকে প্রাপ্ত সনদ বিগত সরকার এমএ (মাস্টার্স) মান দিয়েছে। এবার আমরা যেটা করব, মাদরাসার হুজুরদের নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই প্রাপ্ত সনদ কোন কোন খাতে কাজে লাগানো যায়, যেমন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা যদি তাদের ঢোকাতে পারি, তাহলে কওমি মাদরাসার সনদপ্রাপ্ত আলেমরা তাদের খেদমত করতে পারবেন।’
এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা সম্পর্কে বলেন, ‘ইতোমধ্যে দুর্গাপূজার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর আমরা পূজার জন্য চার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। মন্দির, মণ্ডপ এবং অসচ্ছল মণ্ডপে এই অর্থ যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছি। সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো দুর্বৃত্ত কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি করতে না পারে।’
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কোনো দুর্বৃত্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবে বাধা সৃষ্টি করে আমাদের যাতে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে না পারে, সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনীসহ প্রশাসন কঠোর অবস্থায় আছে। সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো হুমকিও নেই, চ্যালেঞ্জও নেই। আমরা আশাবাদী, ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে তারা তাদের উৎসব পালন করতে পারবেন।’
আল্লামা মাহমুদুল হাসান দা.বা. এর সভাপতিত্বে শিবচরের বাহাদুরপুরে জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসায় সীরাতুন্নবী মাহফিল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা মাওলানা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব হজরত মাওলানা মাহফুজুল হক, প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, গওহরপুর মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন গওহরপুরীসহ অন্যান্যরা।