চট্টগ্রামে আদালতপাড়ায় সংঘর্ষ, এপিপিকে কুপিয়ে হত্যা
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার উত্তাপ ছড়াচ্ছে। চট্টগ্রামের আদালতপাড়া থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকাতে বিক্ষোভ দেখা দেয়। এরইমধ্যে খবর আসে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবীকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) সাইফুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন আইনজীবীর মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তবে, সাইফুল কীভাবে বা কী কারণে মারা গেছেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ৬-৭ জন চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। যদিও একাধিক সূত্রের অভিযোগ, আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে কারাগারে পাঠানোর সময় এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সমর্থকেরা দায়ী। আর আহতের সংখ্যাও ২০-এর মতো।
সাইফুল ইসলামের গ্রামের বাড়ী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া চুনতি এলাকায়। তার হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫)। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)।
এপিপি সাইফুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা কায়েস উদ্দিন দিদার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আদালতের মেইন গেটের বিপরীত পাশের একটি গলিতে ইসকনের অনেক সমর্থক লাঠিসোটা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখানের একটি মসিজিদে ঢুকে তারা হামলা করছিল। একজন মুসলিম হিসেবে আমি এর প্রতিবাদ করতে সেখানে যাই। সে সময় অন্তত ২০ জনের হাতে আমি চাপাতি দেখি। হঠাৎ দেখি, ওই আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কোপানো হচ্ছে। তারপর আমরা কিছু লোকজন মিলে ধাওয়া দিই ইসকনের লোকজনকে। সে সময় তারা ওই আইনীজীবীকে ফেলে রেখে চলে যান। তখন আমি এবং আরও দুজন তাকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাই। যেতে যেতে পথের মধ্যে আইনজীবী মারা যান।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরও সম্ভব হয়নি। পরে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরীকে কল করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন এবং পরে কল করতে বলেন। তবে, পরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল ধরেননি।
চমেক হাসপাতাল, পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত ওই আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম। তিনি চট্টগ্রামে লোহাগাড়া উপজেলার জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।