গ্রিল কেটে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা চুরি
জামালপুর পৌর এলাকায় ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে জানালার গ্রিল কেটে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রামে গতকাল বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে।
চোরেরা বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ও পাশের একটি কক্ষের সব আলমারি ও লকার খুলে তছনছ করে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুরি করে। এই ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের পাশের একটি কক্ষের পেছনের একটি জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই কক্ষের দুটি আলমারী, একটি লকার ও পাশের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে থাকা একটি আলমারী ও একটি লকারের সব তালা খুলে তছনছ করা হয়। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে যায় সদর থানা পুলিশ।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, বিদ্যালয়ের চারপাশেই প্রাচীর ও বেড়া দিয়ে ঘেরা। রাতে নৈশ্য প্রহরী বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন। বিদ্যালয়ে এভাবে কখনও চুরির ঘটনা ঘটেনি। তা ছাড়া বিদ্যালয়ে এত টাকা অরক্ষিত অবস্থায় রাখাটাও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা। তাই স্থানীয়দের কাছে এই ঘটনা অনেকটাই রহস্যজনক।
বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী কাবিল উদ্দিন বলেন, গতকাল দিনগত রাতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের পাশের শিক্ষক মিলনায়তনে তিনি অবস্থান করছিলেন। রাতে তিনি বাইরেও প্রহরায় ছিলেন। কিন্তু রাতে চুরির ঘটনায় তিনি কোনো কিছু আঁচ করতে পারেননি বা কোনো সাড়াশব্দও পাননি। প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যে এত টাকা রক্ষিত সেটাও তাঁর জানা ছিল না।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আনিছুজ্জামান আনিছ বলেন, সকালে স্কুলের দপ্তরি মীর হোসেন কক্ষের তালা খুলে সব কিছু তছনছ অবস্থায় দেখে আমাকে জানালে আমি স্কুলে এসে থানায় খবর দেই। লকার থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি, গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরে উত্তোলন করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি ও সততা স্টোরের জন্য সংরক্ষিত টাকাসহ সাড়ে তিন লাখের অধিক টাকা চুরি হয়েছে।
এভাবে বিদ্যালয়ে এত টাকা রাখার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া সম্ভব নয়। আজ আরও টাকা আদায় করা হবে, সব মিলিয়ে আজ বিকেলে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে টাকা ছাড়া আর কোনো কিছু খোয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়, আমি নিজেও পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত করতে পারব।
ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনিছুজ্জামান আনিছের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর দিনে-দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ চার থেকে পাঁচ মণ নতুন ও পুরাতন বই বিক্রি ছাড়াও সম্প্রতি ইট বিক্রি ও রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে কয়েকটি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।