সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড : জনমনে উদ্বেগ, ঘুরছে নানা প্রশ্ন
দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে সংঘটিত আগুনকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে সন্দেহ করছেন রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সচিবালয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে কেপিআইভুক্ত (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন) এলাকা। সেই স্থাপনায় মধ্যরাতে আগুন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছেন সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে গোটা দেশের মানুষ। তারা বলছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও অনেক ঘটনার ধারাবাহিকতায় সচিবালয়ের এই অগ্নিকাণ্ড।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র। আগুন লাগার ধরন দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ‘পরিকল্পিত নাশকতা’ হতে পারে।
সচিবালয়ে মধ্যরাতে লাগা এই আগুনের ঘটনা জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের। ফেসবুকে নানাজন বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন তুলে তার উত্তর খুঁজছেন। বাংলাদেশ সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই এই আগুনকে নাশকতা বলছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও তুলছেন প্রশ্ন অনেকে।
এদিকে গতকাল বুধবার(২৫ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি করে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন আমলারা। প্রশাসনে এমন চলমান অস্থিরতার মধ্যেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
আগুন পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে বলে মনে করেন সচিবালয়ের কাছে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। তারা বলছেন, সচিবালয়ের ভেতরে শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী ও সকল গোয়েন্দা সংস্থার লোক থাকে। আগুন লাগার পর কি একজনেরও চোখে পড়েনি। এটা কীভাবে সম্ভব।
অন্যদিকে সচিবালয়ে কর্মরত একাদিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একই সময়ে দুই জায়গায় আগুনের সূত্রপাত দেখে সন্দেহ তৈরি হয়েছে—এটি কি শর্ট সার্কিট না অন্য কিছু। বিষয়গুলো নিয়ে অনেক প্রশ্ন জাগছে বলেও জানান তারা।
আগুনের ঘটনা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, সচিবালয়ের ভেতরে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যর্থতা ছিল। তৃতীয় কোনো পক্ষ সুযোগ নিয়ে আগুন লাগাতে পারে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ খান বলেন, ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কেপিআইভুক্ত এলাকা। যদিও এখানে আগেও একাধিকবার আগুন লেগেছে। পিডব্লিউ কাজও করেছে। আবার কেন তাহলে আগুন লাগলো? আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এভাবে কখনো দুর্ঘটনার আগুন লাগে না।’
আলী আহমেদ খান বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা যখন আগুন লাগায় তখন একসঙ্গে একাধিক স্থানে আগুন লাগে। এমন দুর্বৃত্তায়নের আগুন আমি আগেও দেখেছি। এখানেও তাই হয়েছে। এটা শর্টসার্কিট না, আগুন লাগানো হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি ছিল। হয়তো দুর্বৃত্তরা এই ছুটির সুযোগে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগাতে পারে। এখানে ফায়ার সার্ভিস ছিল। ভেতরে ফায়ার স্টেশন আছে। আর ক্যামেরা তো আছেই। সার্বক্ষণিক দেখভালের লোক আছে। সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে এক বা দুজন লোক ছিল না, দেড়-দুই শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী ছিল। তারা কি সবাই একসঙ্গে ঘুমাচ্ছিল? সেটা তো হতে পারে না।’
এ ঘটনাকে নাশকতা বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বসহ দেখার অনুরোধ জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ বলেন, ‘এটা ডিজাস্টার। কেউ চান্স নিয়েছে মনে হচ্ছে। গুরুত্বসহ নাশকতার ঘটনা কিনা তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সচিবালয়ের আগুনকে সরাসরি নাশকতার অংশ হিসেবে দেখছেন ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এই আগুন স্যাবোটাজ, অবশ্যই এটা সন্দেহের শুরুতে রাখতে হবে। লাগানো আগুন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এটা কেপিআইভুক্ত এলাকা। আমাদের এখন চ্যালেঞ্জিং সময় যাচ্ছে। এটা ধরে নিতে হবে, এই আগুনের মোটিভ কী হতে পারে? এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে সচিবালয়ের চারটা ফ্লোরে আগুন, যেখানে চারটা কমিশন চলছে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের নথিপত্রের প্রয়োজন হবে। এই আগুনের টার্গেটই হচ্ছে সেই গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে দেওয়া। কারণ কমিশনের জন্য বিভিন্ন সময় নথিপত্রের প্রয়োজন হবে। যে উচ্চপদস্থ কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাদের সবকিছুর আগে বিবেচনায় রাখতে হবে যে এটা স্যাবোটাজ। যদি প্রথমেই স্যাবোটাজ না ধরে তদন্ত করা হয় তাহলে ভুল হবে।’
ফায়ার সার্ভিসের ব্যর্থতাও তদন্ত দাবি
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (অপারেশনস) মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, সচিবালয়ে লাগা আগুন নির্বাপনে ১০ ঘণ্টা সময় নেওয়া অবিশ্বাস্য। সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। নাশকতার যথেষ্ট কারণ আছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ সেসব জায়গায় আগুন লাগছে। আরেক ভবনে তো আগুনই লাগেনি।
এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘গতকাল ছুটির দিন ছিল। রাত দেড়টায় আগুন লাগল, যেখানে বাইরের মানুষের প্রবেশের সুযোগ নেই। এর মধ্যে একটা পক্ষের ৪০ ঘণ্টার আল্টিমেটাম চলছে। কারা আল্টিমেটাম দিয়েছে তাদের ধরতে হবে। মধ্যরাতে লাগা আগুন নেভাতে ১০ ঘণ্টা লাগলো কেন, তা-ও দেখতে হবে।’
শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘যদি দুর্ঘটনাজনিত আগুন হয়, তাহলে এক জায়গায় লাগার কথা। একসঙ্গে তিন জায়গায় আগুন লাগার কথা নয়। লাগানো হলেই তিন জায়গায় আগুন জ্বলবে। তো পুলিশ, আনসার, বিজিবি ছিল। চারদিকে লাইট বন্ধ ছিল। ফায়ার সার্ভিস কী করল? তাদের কী দুর্বলতা ছিল? বঙ্গবাজার ১০ গজের ভেতরে, সেই আগুনও তারা দ্রুত নেভাতে পারলো না। সচিবালয় কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান, সেখানেও তারা আগুন নেভাতে পারছেন না। এটা হয় না, মানা যায় না। তাদের ব্যর্থতাকেও তদন্তের বিবেচনায় আনতে হবে।’
বাংলাদেশ সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড, নাশকতার আশঙ্কা
আগুনের ঘটনার পর সচিবালয় পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, ‘কী কারণে আগুনের সূত্রপাত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সবকিছু নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। আগুনের ঘটনায় মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করেছে। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আছেন। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি কাজ করছে।’
মুহাম্মদ জাহেদ কামাল আরও বলেন, ‘সচিবালয়ে আগুনে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। বিশেষ করে বড় গাড়িগুলো ঢোকানো কঠিন ছিল। সচিবালয়ের গেট ভেঙে দুটি বড় গাড়ি ঢোকানো হয়। রাত ১টা ৫২ মিনিটে আমরা ম্যাসেজ পাই সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে আগুন লেগেছে। ১টা ৫৪ মিনিটের মধ্যে আমাদের ইউনিট পৌঁছে যায়। মোট ১৯টি ইউনিট নিয়োজিত করা হয়। এর মধ্যে ১০টি ইউনিট সরাসরি কাজ করেছে। ৬, ৭, ৮ ও ৯ এই চারটি তলায় আগুন লেগেছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর ৭ নম্বর ভবনের প্রতিটি দপ্তরের সিসিটিভি ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিডিও দেখা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সচিবালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেছিলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি না তা তদন্তের পর বলা যাবে।
সচিবালয়ের মধ্যরাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের সিদ্ধান্ত জানাতে গতকাল সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। আমাদেরকে ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে তাদেরকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বিগত সময়ে হওয়া অর্থলোপাট, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছিলাম। কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল।’
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ‘ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিত’ বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘সচিবালয়ে যেভাবে আগুন লেগেছে এবং এটার ধরন, অবস্থান যেমন, এটা কখনোই সাধারণভাবে বা ন্যাচারালি বা কোনো দুর্ঘটনাবশত আগুন হতে পারে না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, ষড়যন্ত্র করে, প্ল্যান (পরিকল্পনা) করে এই আগুনটি লাগানো হয়েছে।’
অন্যদিকে ফ্যাসিস্টদের পক্ষে ‘সিমপ্যাথি গেইন’ ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এই ক্যাম্পেইন না থামাতে পারলে আপনি শেষ। আজকে আমলা আগামীকাল অন্য কেউ।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ফ্যাসিজমের এনাবলারদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা দেখানোর পরিণাম এই কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে। হাসিনার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) ঘি খাওয়া ফ্যাসিস্ট এনাবেলররাই এখন মানবাধিকারের আলাপ দিয়ে ফ্যাসিস্টদের পক্ষে ‘সিমপ্যাথি গেইন’ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। এই ক্যাম্পেইন না থামাতে পারলে আপনি শেষ। আজকে আমলা, আগামীকাল অন্য কেউ।
এদিকে, শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের নথি চাওয়ার পর সচিবালয়ে ভয়াবহ আগুন লাগা ও অনেক নথি পুড়ে যাওয়া দেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই আগুনের ঘটনায় মানুষের মনে বিরাট প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সচিবালয়ের মতো স্পর্শকাতর ভবনে ভয়াবহ আগুন এবং আগুন নেভানোর কাজে গিয়ে একজনের মৃত্যু ও দুই-তিনজন আহত হওয়ার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে ভস্মীভূত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়া অস্বাভাবিক নয়।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে রাত ১টা ৫৪ মিনিট থেকে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে একে একে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮টি ইউনিট কাজ করলেও পরে আরও ১১টি ইউনিট যুক্ত হয়।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ছাই হয়ে যাওয়া চারটি ফ্লোরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ছিল। এই চারটি ফ্লোর একেবারে পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের ঘটনায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং সড়ক, পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়েও পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।