সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড, বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের বিবৃতি
বাংলাদেশ সচিবালয়ে নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বার্তায় বলা হয়, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও তাদের সহযোগী ও সুবিধাভোগী-দলবাজ, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনপ্রশাসনে তথা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণস্থান মন্ত্রণালয় হতে শুরু করে সব বিভাগ ও দপ্তরে রয়ে গেছে। স্বৈরাচারের দোসরদেরকে অব্যাহত কর্মকাণ্ডের মধ্যে সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা। এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের বিশেষ ও বিস্তারিত তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
সংগঠনের সমন্বয়ক এ বি এম আব্দুস সাত্তার স্বাক্ষরিত বার্তায় আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, গত কয়েকদিনে একটির পর একটি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটে চলছে। নোঙ্গর করা জাহাজে সাতজনকে হত্যা, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে ছয় আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা, সর্বোপরি রাষ্ট্রের হৃদপিন্ড বা প্রাণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সচিবালায়ে অগ্নিকাণ্ড।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটি। বন্ধ সচিবালয়ে রাতের বেলায় অতিগুরুত্বপূর্ণ ৭ নম্বর ভবনে একসাথে তিনটি পয়েন্টে আগুন। ভবনের ৮ তলায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া কুকুরের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যত সব অবিশ্বাস্য কাণ্ড। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবর, প্রত্যক্ষদশীদের বক্তব্যে স্পষ্টতই বুঝা এটি কোন দুর্ঘটনা নয়। এ অগ্নিকাণ্ড নাশকতামূলক, ষড়যন্ত্রমূলক এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসর মন্ত্রী-সচিব’দের অপকর্মের সাক্ষ্য-প্রমাণ বিনষ্ট করার জন্যই এমন একটি আর্ন্তঘাতমূলক কাজ করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে বটে, কিন্তু তাদের সহযোগী ও সুবিধাভোগী-দলবাজ, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা- কর্মচারীরা জনপ্রশাসনে তথা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণস্থান মন্ত্রণালয় হতে শুরু করে সকল বিভাগ ও দপ্তরে রয়ে গেছে।
বার্তায় আরও বলা হয়, আমাদের পক্ষ থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর হতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদেরকে অপসারণ/অব্যহতি/বরখাস্ত করে তদন্তপূর্বক শাস্তির আওতায় আনার এবং দক্ষ, সৎ,কর্মঠ ও দেশপ্রেমিক দল নিরপেক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে নতুন করে জনপ্রশাসন সাজানোর আহবান জানানো হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেনি। ফলে ফ্যাসিস্টদের জন্য নাশকতামূলক কাজ করে দেশকে অস্থিতিশীল ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দুর্নীতি ও লুটপটের সাক্ষ্য-প্রমাণ ধ্বংস করা সহজ হচ্ছে। তারা তাদের প্রভুদের নির্দেশনা মত এখনও কাজ করে যাচ্ছে।
বার্তায় বলা হয়, এ ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের বিশেষ ও বিস্তারিত তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। প্রয়োজনে ভারত ব্যতীত অন্য দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। দোষী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের ও তাদের সহযোগী ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বারবার এমন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড থেকে দেশকে রক্ষা করার লক্ষ্যে অবিলম্বে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের দোসরদেরকে চিহ্নিত করে চাকরি থেকে অব্যহতি/অবসর/অপসারণ করা হোক। যাদের কারণে এসব চিহিৃত দালাল দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে আছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। জুলাই-আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনাধারী দক্ষ, সৎ, কর্মঠ, দল নিরপেক্ষ, সাহসী ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জনপ্রশাসনের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তরে নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসনকে নতুনভাবে সাজানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।