জনজরিপে তৈরি হবে বিএনপির ইশতেহার
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবির পাশাপাশি নির্বাচনি ইশতেহার তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। জনআকাঙ্খার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তৃণমূল থেকে জরিপের মাধ্যমে জনগণের চাহিদা তুলে এনে নির্বাচনি ইশতেহারে যুক্ত করবে দলটি। এরই মধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও দলটির দায়িত্বশীল নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে জনবান্ধব একটা ইশতেহার দেবে বিএনপি। কীভাবে তৃণমূল মানুষের ভাবনা ইশতেহারে যুক্ত করা যায়, ইতোমধ্যে তার রোডম্যাড তৈরি করা হয়েছে। পাঁচটি বেসরকারি সংস্থা পৃথক পৃথকভাবে এ জরিপ নিয়ে কাজ করবে। খুবই গোপনীয়তার সঙ্গে এ কাজ করা হবে। এই নিয়ে দায়িত্বশীলরা কিছু বলতে নারাজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনটিভি অনলাইনকে দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, পাঁচটি বেসরকারি সংস্থা পৃথক পৃথকভাবে কাজ করবে। এজন্য ইতোমধ্যে একটি ফরমেট তৈরি করা হয়েছে। দলের হাইকমান্ড বিষয়টি সরাসরি তত্ত্বাবধান করবেন। এখনই এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না|
ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে বিএনপির নির্বাচনি ইশতেহার তৈরি করা হবে। এর সাথে যুক্ত হবে জরিপের মধ্য দিয়ে উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত বিষয়গুলো। এজন্য একটি ফরমের মাধ্যমে ঘরে ঘরে গিয়ে জরিপের সময় তথ্য তুলে আনা হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপি তাদের দলীয় প্রার্থীও বাছাই করে নিয়ে আসবে বলে জানা গেছে। তবে এই নিয়ে এখনই কিছু প্রকাশ্যে আনছে না দলটি।
বিএনপির নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে। এর মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। দেশ ও জাতির সমঅধিকার বাস্তবায়ন করা হবে। এসব দফা বাস্তবায়ন করা হলে রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক কাঠামো সংস্কারের মাধ্যমে জাতিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এতে কোনো রাজনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। ৩১ দফা নিয়ে সারাদেশেই দায়িত্বশীল নেতারা প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমেই আগামী দিনে জনআকাঙ্খার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বিএনপি নেতারা কাজ করে যাবেন বলে জানান দায়িত্বশীল নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে বিএনপি। এ জন্য যেকোনো মূল্যে ৩১ দফার পক্ষে সমর্থন নেওয়ার জন্য জনগণের পেছনে ঘুরতে হবে। জনগণের আন্দোলনে স্বৈরাচার পালিয়েছে। তবে দেশের ভেতরে-বাইরে দেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বর্তমানে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। সংগ্রাম করেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘৩১ দফা বাস্তবায়ন হলেই নিরাপদ দেশ গড়া সম্ভব। ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য সব নেতা-কর্মীকে জনগণের কাছাকাছি এবং প্রতিটি ঘরে ঘরে যেতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, ‘৩১ দফা ধর্মগ্রন্থ না, আরও ভালো কিছু নিয়ে কারও কোনো মতামত থাকলে আমরা গ্রহণ করব। তবে ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে। খাল খনন করে জিয়াউর রহমান পানি সমস্যা সমাধান করেছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়েও জিয়াউর রহমান অনুসরণীয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা ৩১ দফা ঘোষণা করেছি। আমরা এটা নিয়ে মানুষের কাছে যাচ্ছি। নির্বাচনের সময় যখন আসবে তখন ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। এই মুহূর্তে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে সময়ের প্রয়োজনে যা যা দরকার, সব যুক্ত করা হবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের ইশতেহার আমরা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছি। ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে আমাদের নির্বাচনি ইশতেহার হবে। মানুষের চাওয়াটা প্রাধন্য দিয়েই কিছু বিষয় ইশতেহারে যুক্ত করা হবে। কোনোটা স্বল্পমেয়াদী হবে, কোনোটা হবে দীর্ঘমেয়াদী।’