গোপালগঞ্জ এলজিইডি অফিসে দুদকের অভিযান, মিলেছে অনিয়মের সত্যতা
গোপালগঞ্জে সরকারি অর্থায়নে নিজের ব্যক্তিগত খামারে ২৪ লাখ টাকার বক্স কালভার্ট নির্মাণ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) অভিযান চালিয়েছে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে দুদক।
আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বেলা ১১টার দিকে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মশিউর রহমানেন নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর গত বছরের নভেম্বরে গণমাধ্যমে ‘সরকারি টাকায় নিজের খামারে কালভার্ট বানিয়েছেন আ. লীগ নেতা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন আমলে নিয়ে প্রধান কার্যালয়ের অনুমতিক্রমে আজ এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এছাড়াও সাবেক আইজিপি বেনজীরের সাভানা ইকো রিসোর্ট এন্ড ন্যাচারাল পার্কে সরকারি টাকায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৪২০ মিটার পিচঢালা রাস্তা নির্মাণের অভিযোগেও অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান শেষে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আমরা আজকে দুটি অভিযোগের বিষয়ে অভিযানে আসছি। প্রথমটি হলো সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নে ২০১৯ সালে একটি পিচঢালা রাস্তা ও একটি বক্সকালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি অফিস। তবে সেখানে রাস্তা নির্মাণ হলেও বক্সকালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খানের ব্যক্তিগত খামারে। একটা সরকারি প্রজেক্ট যদি হয় তাহলে সেটি জনগণের চাহিদা অনুযায়ী জনকল্যাণে করা হয়। আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি কালভার্টটি করা হয়েছে মাহাবুব সাহেবের খামারের জন্য। আজকে আমরা নথি পর্যালোচনা করে দেখলাম কালভার্টটির জন্য ২৪ লাখের কিছু বেশি টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এই পুরো টাকাটাই শুধুমাত্র মাহাবুব আলী খানের ব্যক্তিগত খামারে ব্যয় করা হয়েছে। এখানে জনগণের কোন স্বার্থ নেই। বিষয়টি আমরা সত্যতা পেলাম।
দ্বিতীয়টি হলো সদরের বৈরাগীটোল এলাকায় সাবেক আইজিপি বেনজীরের সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে প্রায় ৪২ লাখ টাকায় ৪২০ মিটার রাস্তা করা হয়েছে। এটারও সত্যতা আমরা পেয়েছি। এই দুটি কাজই তারা ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে জনগণের টাকায় নির্মাণ করেছেন। এটা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের অপরাধ। আমরা প্রধান কার্যালয়ে বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবো। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক বলেন, কাজগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আমি এখানে আসার আগেই। আমি পরবর্তীতে শুধু বিল পাস করেছি। পূর্বে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা ওই সকল ব্যক্তির দ্বারা প্রভাবিত হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।