৬ মাসেও দৃশ্যমান হয়নি স্বৈরাচারদের আইনের আওতায় আনার পদক্ষেপ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/01/bnp_flg_.jpg)
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গত ৬ মাসেও পলাতক স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ জনসম্মুখে দৃশ্যমান করতে সফল হয়নি। তাই জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, হাজারও শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত, পতিত, পরাজিত ও পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উসকানিমূলক আচরণ, জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য ও মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। ফলে বুধবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলক ভেঙে ফেলার মতো জনস্পৃহা দৃশ্যমান হয়েছে।
বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সরকার বহাল থাকা অবস্থায় জনগণ এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিলে দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। অথচ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা ছিল দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। যা বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নানান ধরনের দাবি-দাওয়া নিয়ে যখন-তখন সড়কে ‘মব কালচারের’ মাধ্যমে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করছে, যা সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে মুন্সিয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, নিন্দিত ঘৃণিত পলাতক স্বৈরাচার ও তার দোসরদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা। পরাজিত ফ্যাসিস্টদের উসকানিমূলক তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অতি জরুরি অগ্রাধিকার। অথচ এসব বিষয়ে দৃশ্যমান এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এখনও প্রশাসনকে পতিত ফ্যাসিস্ট শাসকের দোসরমুক্ত করা হয়নি বলে দাবি করা হয় এই বিবৃতিতে।
এতে বলা হয়, বিচার বিভাগে কর্মরত ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও বিদ্যমান। পুলিশ প্রশাসনে গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী সক্রিয় সদস্যরা এখনও কর্মরত। এমতাবস্থায় সরকার জনআকাঙ্খা পূরণে সফলতা অর্জন করতে পারবে কিনা তা যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক করে।
বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা জরুরি বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী সব শ্রেণি-পেশার মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা গায়েবি মামলার কোনো সুরাহা এখনও হয়নি। গণতন্ত্রকামী জনগণ ফ্যাসিবাদী আমলের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় এখনো হয়রানির শিকার হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে শিগগিরই একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কার সাধন করে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করাই বর্তমান সরকারের প্রধানতম ম্যান্ডেট। অথচ জনআকাঙ্খা উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেরাই এই অগ্রাধিকারকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যান্য বিষয়ে অধিক মনোযোগী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।