অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে নওগাঁ হাসপাতাল ঘেরাও, তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা

নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল সদর হাসপাতালের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে হাসপাতাল ঘেরাও করে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সমস্যা নিরসনে হাসপাতাল প্রশাসনকে এক ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। কিন্তু হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পেলে তারা তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। তবে এসময় তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার জাহিদ নজরুল চৌধুরী অফিসে উপস্থিত ছিলেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানান, ৫ আগস্টের পর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন, ওষুধ কালবাজারে বিক্রি, হাসপাতালের চিকিৎসকরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করা, রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার-হয়রানিসহ বিভন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও হাসপাতাল চত্বরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দূর করার বিষয়ে হাসপাতাল প্রশাসনকে বার বার বলা হয়। কিন্তু তারা এসব বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে হীরকজয়ন্তী পালনে ব্যস্ত। তাই বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ঘেরাও করে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী বলেন, এই হাসপাতালটি অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে রোগীরা সঠিক চিকিৎসাসেবা পায় না। কর্তব্যরত চিকিসৎকরা হাসপাতালে না এসে বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। চিকিৎসাসেবা আমাদের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ তা কতটুকু পাচ্ছি?
ফজলে রাব্বী আরও বলেন, হাসপাতাল ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ কালোবাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। অথচ চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা ওষুধ পায় না। হাসপাতাল চত্বরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যের কারণে রোগীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এসব বিষয় সমাধানের জন্য আমরা হাসপাতাল প্রশাসনকে বহুবার বলেছি। কিন্তু তারা এসব সমস্যা নিরসনে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। তাই বাধ্য হয়ে আমরা তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা দিয়েছি।
হাসিব চৌধুরী নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এসব সমস্যা সমাধানের জন্য যতক্ষণ হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকবে।
এসময় দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসাসেবা চালু রাখার আহ্বান জানান। এসব সমস্যা নিরসন না করে চিকিৎসকরা যদি কোনো আন্দোলনে যায়, তাহলে সেটি প্রতিহত করার হুশিঁয়ারি দেন তিনি।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার জাহিদ নজরুলের চৌধুরীর সাথে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।