অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর রামরাই দিঘি

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামরাই দিঘি অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত পুরো দিঘিটি। ২২ একর জলাশয়ের ঐতিহ্যবাহী এই দিঘিতে বক, রাঙা ময়ূরী, ছোট সরালি, সারশ, গাঙচিল, পানকৌড়ি, পাতি হাঁসসহ নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পাখি এসেছে সুদূর সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। কখনও মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে দল বেঁধে। আবার কখনো মাছ শিকারের জন্য থাকছে ওত পেতে।
প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি পাখির এমন আনাগোনা চোখে পড়ে। প্রতি বছর শীতের শুরুতেই বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আশ্রয় ও খাদ্যের আশায় আসে এসব পাখিরা।
স্থানীয়রা জানায়, রামরাই-দিঘি এলাকাটি নির্জন। শীতের শুরুতে এখানে দেশি পাখি ছাড়াও অতিথি পাখি আসে। দিনভর পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে পুরো পুকুরের আশপাশ। অতিথি পাখিগুলো এখানে কয়েক মাস থাকার পর শীতের শেষে আবার ফিরে যায় নিজ নিজ দেশে। আর এই সুন্দর ডানা ঝাপটানো ওড়াউড়ি আর কিচিরমিচির শব্দ মন কেড়ে নেয় পাখিপ্রেমীদের। হাজার হাজার পাখি যখন শুরু করে কিচিরমিচির তখনই সৃষ্টি হয় নান্দনিক সুরেলা পরিবেশ। এই প্রাকৃতিক পরিবেশ ও পাখিদের খেলাধুলা দেখতে দূর থেকে ছুটে আসে অনেক পর্যটক। দূর থেকে আসা এই পাখিদেরকে এক নজর দেখতে ছুটে আসেন বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই পুকুরটিতে পাখি ছাড়াও দেখার মতো রয়েছে নান্দনিক লিচু বাগান। শিশুদের জন্য রয়েছে খেলনার উপকরণ। পুকুরের পানিতে ঘুরে ঘুরে দেখার জন্য দৃষ্টিনন্দন একটি নৌকা। বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা নৌকায় ভ্রমণ করে পাখির ওড়াউড়ির দৃশ্যগুলো ক্যামেরায় ধারণ করে; যা তাদের মধ্যে তৈরি করেছে এক নতুন আনন্দের মাত্রা।

রামরাই দিঘির মৎস্যচাষি নওরোজ কাউসার কানন জানান, অতিথি পাখির আগমনে আমরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তারপরও আমরা পাখিদের যেন সুন্দর একটি অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখছি। কেউ যেন পাখি শিকার না করতে পারে সে বিষয়ে প্রশাসনসহ আমরা সর্বদা নজরদারি করছি।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, রামরায়-দিঘি অতিথি পাখির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। আমরা নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছি। পাখি শিকারের কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি পাখি শিকার করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।