নওগাঁর ধামইরহাটে মামুনুর রশীদ (৪৫) নামে এক কৃষক দল নেতা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ভাতকুন্ডু এলাকার মৃত মহির উদ্দীনের ছেলে। জাহানপুর ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের কৃষক দলের সভাপতি ছিলেন তিনি।

গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মামুনুর রশীদের স্ত্রী খাতিজা বেগম জানান, গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ফসলের মাঠে স্বামীকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এরপর গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়পুরহাট সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করেন। এরপর শরীরের অবনতি ঘটলে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মামুন বিষপান করেছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। পরদিন বুধবার বেলা ১১টায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মামুনের ছেলে আবু তাহের ও স্থানীয়রা বলেন, বরেন্দ্রের গভীর নলকূপ অপারেটর হিসেবে নিয়োগের কথা বলে কে বা কারা ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। গত ১২ তারিখ নিয়োগ হওয়ার কথা থাকলেও তা না হওয়ার কারণে মন খারাপ ছিল মামুনের। সম্ভবত এ কারণেই তিনি বিষপান করে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে একটি চিরকুট লিখে গেছেন তিনি। চিরকুটের সূত্র ধরে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।

মামুনের লিখে যাওয়া বলে যে ‍চিরকুট পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া গেছে সেটির হাতের লেখা যাচাই করা যায়নি। সেই চিরকুটে লেখা, ‘আমাইতাড়া বাজার কেবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী ও হানজালার নির্দেশে এবং শামীম ভাইয়ের কথামতো তরিকুল ইসলাম, পৌর কৃষক দলের সভাপতি আরমান হোসেন রিপন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ও বাবুল ভাইকে বিভিন্ন সময় ১০ ও ২০ হাজার টাকা করে মোট ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। টাকা নিয়েও কাজ না হওয়ার কারণে আমার মৃত্যুর জন্য তারা দায়ী।’

চিরকুটে থাকা হানজালা নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ডিপ টিওবয়েলের বিষয়ে আমি কারও কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা নেইনি। কাউকে বলিওনি এ বিষয়ে টাকাপয়সা লাগবে।’

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ব্যক্তির বগুড়া মেডিকেলে মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাদেরকে বগুড়ায় পোস্টমর্টেম করতে বলেছি। এ বিষয়ে পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’