কোনো দলের তল্পিবাহক না হতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ

কোনো দলের তল্পিবাহক হয়ে, কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তাদের অন্যায্য ও অন্যায় আবদারে অপেশাদার আচরণ না করতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারি পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে তিনি এই নির্দেশ দেন।
৪০তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের ৬৬ জন সারদায় প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন। তাদের আরও চার মাস আগে সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার কথা ছিলো। তবে নানা জটিলতায় তা আটকে যায়। বিভিন্ন অভিযোগে এই ব্যাচের ৬ শিক্ষানবিশ সহকারি পুলিশ সুপারকে অব্যাহতি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আরও তিনজন রয়েছেন সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। ফলে ৪০তম ব্যাচের ৫৭ জন এবং ৩৮তম ব্যাচের তিনজনসহ ৬০ জন শিক্ষানবিশ সহকারি পুলিশ সুপার সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশ নেন। কুচকাওয়াজের শোভা বর্ধনের জন্য তাদের সঙ্গে একাডেমির অন্য প্রশিক্ষণার্থীরা মোট ১০টি কনটেইনজেন্টে বিভক্ত হয়ে সমাপনী কুচকাওয়াজে যোগ দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম ও পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান ভূঞাসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করতে হবে। থানায় এসে মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে, সেই চেতনাকে ধারণ করে পুলিশ বাহিনীর গৌরবকে আরও সমুন্নত রাখতে হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দনবীন কর্মকর্তাদের নিকট সমাজে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর হয়ে প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হয়ে ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য সেবা প্রদানের নির্দেশ দেন।
নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সকল নাগরিকের, কোনো দলের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়, কোনো সম্প্রদায়ের নয়। বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, যারা সুনির্দিষ্ট আইন মেনে চলেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবে। তারা কোনো দলের তল্পিবাহক হয়ে কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন কিংবা তাদের অনায্য ও অন্যায় নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে অপেশাদার আচরণ ও বেআইনি কাজ করবে না, আজকের এই সমাপনী অনুষ্ঠানে আপনারা এই শপথে বলীয়ান হবেন।