এনআইডি সেবা ইসির অধীনেই থাকা উচিত : সিইসি

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে থাকা উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মতামত ব্যক্ত করেন।
এনআইডি সেবা ইসির অধীনে থাকা উচিত কি না, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘অবশ্যই থাকা উচিত। সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের পর থেকেই তো বলছি। ভোটার নিবন্ধনের বাই প্রডাক্ট তো। এটি থাকা উচিত। আমরা এই বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছি।’
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলমান আছে। সামনে একটি নির্বাচন আছে। বাস্তব বিষয়াদি সব বিবেচনায় নিয়েই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে—এটি আমি ধারণা করতে পারি। ইতোমধ্যে প্রাথমিক সভায় প্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের মতামত তুলে ধরেছি। সভার কার্যপত্র এখনও পাইনি। সেটি পেলে আমরা বুঝতে পারব তাদের চিন্তাভাবনা কী। এ বিষয়ে আমাদের মতামত সরকারকে লিখিত আকারেও জানাব। সরকারের সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সিইসি আরও বলেন, আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে কিছু করে ফেলবে আমি এমনটা মনে করছি না।
যদি ইসি থেকে এনআইডি চলে যায়, তাহলে কী সমস্যা হতে পারে? এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, সমস্যা যা হবে আমরা লিখিত আকারে জানাব। সমস্যা তো হবেই। তবে সরকার এক ধরনের চিন্তা করছে—কীভাবে সব ধরনের নাগরিক সেবা এক জায়গা থেকে দেওয়া যায়। একটি কর্তৃপক্ষের মতো করে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে এ রকম একটা কথা আমি শুনেছিলাম। কারণ, আমি তো উপদেষ্টা পরিষদের সভায় থাকি না। সরাসরি শুনিনি। যাই হোক গতকাল (সোমবার) একটি সভা হলো সেখানে প্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের মতামত তুলে ধরেছি। আরও সভা হবে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে এনআইডি নির্বাচন কমিশন থেকে নিয়ে যাবে আমি এমনটা শুনিনি।
খসড়া করার আগে ইসির সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল কি না? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, দেখেন এনআইডিটা কিন্তু নিয়ে যাচ্ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনও করে ফেলেছিল, কার্যকর হয়নি। আমরা সরকারকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, এটি স্বরাষ্ট্রে যাওয়াটা ঠিক হবে না। কীভাবে কাজটা করা যেতে পারে এটির একটি চিন্তা আছে তো। এটা এমন না যে শুধু এনআইডিটা আমাদের থেকে নিয়ে গেল আর সবকিছু হয়ে গেল। এমন হওয়া উচিতও না। এমন কিছু হবে বলে আমি অন্তত মনে করছি না। কারণ প্রথম সভায় আমাদের যখন ডেকেছেন, উনারা আমাদের মতামতের গুরুত্ব দেবেন বলেই তো আমাদের ডেকেছেন। যদি আলাদা কোনো কর্তৃপক্ষ হয়েও যায়, আর এনআইডি আমাদের অধীনে থাকে তাহলেও তো সমস্যা নেই। অন্যান্য সেবাও যদি আমাদের অধীনে আসে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়া হবে। কেন এনআইডি সেবা আমাদের অধীনে রাখা দরকার তা প্রতিনিধির মাধ্যমে আমরা বলেছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এটি একটি বড় সিদ্ধান্ত। যেখানে মাঠে ভোটার নিবন্ধন চলছে, হাজার হাজার লোক কাজ করছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন আছে, যেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরমধ্যে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত হবে বলে আমি অন্তত মনে করি না। যেখানেই কথা বলার সুযোগ থাকবে সেখানেই আমরা এ বিষয়ে কথা বলব। এনআইডি চলে যাবে এ বিষয়ে ইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি হতাশার মতো চলে এসেছে।