মজুরি পান চিংড়ির মাথা, তাই বিক্রি করে চলছে হাজারও নারীর সংসার

জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার জন্য দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটায় চিংড়ির অবশিষ্ট অংশের বিনিময়ে হাজারো নারী মাছ বাছাইয়ের কাজ করছে। ভোরের আলো ফোটার আগে থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে মাছ বাছাই কাজ।
জেলেপল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন রকম মাছ বাছাই করে প্যাকেটের জন্য নারীদের মজুরি দেওয়া হচ্ছে চিংড়ির মাথা। কখনো কখনো দেওয়া হয় কেজি প্রতি ১২ থেকে ১৫ টাকা করে। প্রতিদিন মোট ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা শ্রম দিয়ে পাচ্ছেন তারা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। নারীরা পাচ্ছেন না তাদের শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন। মজুরির এই অল্প টাকা দিয়ে সংসারের হাল ধরতে হচ্ছে এসব নারীদের।
মাছ বাছাইয়ে নিয়োজিত হালিমা বেগম বলেন, ‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে যা পাই তা দিয়েই সংসার চলে। বিভিন্ন মাছের মধ্য থেকে চিংড়ি মাছ বাছাই করে মজুরি বাবদ কেজি প্রতি ১২ থেকে ১৫ টাকা পাই। টাকা না নিলে চিংড়ির মাথা দেওয়া হয়। পরে সে সকল চিংড়ির মাথা স্থানীয় বাজারে ১২-১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে সংসার খরচ চালাই। দৈনিক ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করলে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মজুরি পাই। এই স্বল্প মজুরির টাকা দিয়ে আমাদের সংসার খুব কষ্টে চলে।’
উপকূল অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘‘উপকূলের নারীরা যেভাবে সংসারের হাল ধরছেন সেটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে নারীদের সরকারি সহায়তার মাধ্যমে এসব কাজে আরও উদ্যোগী করা প্রয়োজন। কারণ এরাই অর্থনীতি চাঙ্গা করার মূল হাতিয়ার। উপকূলে নারী জেলে শ্রমিক রয়েছেন– এমন তথ্য সরকারের কাছে নেই। তাদের নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার।
শফিকুল ইসলাম খোকন আরও বলেন, উপকূলের অনেক নারী আছেন যারা চিংড়ি মাছ বাছাই করে জীবিকা নির্বাহ করে, তাদেরও শ্রমিকের আওতায় আনা দরকার।
পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল হক বলেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কিছু সংখ্যক নারীরা মাছ বাছাইয়ের কাজ করে থাকে। তালিকাভুক্ত জেলেরা সরকারি সহায়তা পেলেও এই সকল নারীরা পাচ্ছে না সরকারি সহায়তা। নারী জেলেদের জন্য কোনো সরকারি সহায়তা বরাদ্দ নেই। এই সকল নারী জেলেদের সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হলে তাদের সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।