নওগাঁয় এবার আমে ২৬৩ কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আমবাগানগুলো মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর। থোকা থোকা অলংকারে সজ্জিত মুকুলের এমন দৃশ্য বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রকৃতির রূপ বৈচিত্র্য। উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পত্নীতলায় নাগ ফজলি, ল্যাংড়া, আম্রপালি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, কাটিমন, বারি আম-৪, বারি আম-১১, গুটি আম ও ফজলি জাতের সুস্বাদু আমের উৎপাদন বেশি। তাই কীটনাশক ছিটিয়ে পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগান মালিকরা। আশানুরূপ দাম থাকলে গত বছরের ন্যায় এইবারেও বড় ধরনের লাভের হাতছানি দেখছেন বাগান মালিকরা।
শিহাড়া ইউনিয়নের বাগান মালিক আবু রায়হান বলেন, আমি একটি কোম্পানির চাকরি ছেড়ে বাসায় এসে প্রথমে ১০ কাঠা জমির ওপরে আম বাগান করি। এখন আমার ৫ বিঘা নিজস্ব আম বাগান রয়েছে। আরও ৫ বিঘা লিজের ওপরে নেওয়া আছে। চাকরির থেকে কৃষি কাজেই অনেক লাভ। আগের বছরের তুলনায় এই বছর আমের ভালো ফলন ও ভালো দাম পাবো।
হলাগান্দ গ্রামের যুবক জসীম উদ্দিন বলেন, গ্রাজুয়েশন শেষ করার পরে চাকরির জন্য ছুটাছুটি করে হতাশ হয়ে এলাকায় চলে আসি। এলাকায় খুব কষ্ট করে ১ বিঘা জমির ওপরে আম রুপালি বাগান তৈরি করি। এখন আমার ৪০ বিঘা বাগান রয়েছে। আমার বাগানে সবসময়ের জন্য ৫ জন লোক কাজ করে। আমার মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান হয়েছে। আশা করছি এইভাবে ভালো টাকার আম বিক্রি করতে পারব।

আম চাষি সানোয়ারুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, আমি দশ বছর থেকে আম বাগান চাষ করি। গত বছর পাঁচ বিঘা আম বাগান থেকে আম বিক্রি করে ১৩ লাখ টাকা লাভ করেছি। এই বছর ৩০ লাখ টাকা লাভ করার আশা করছি।
স্থানীয় আমবাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানান, পত্নীতলায় আম বিক্রির জন্য কোনো আড়ত নেই। আম বিক্রি করতে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় যেতে হয়। আম ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য উপজেলার নির্দিষ্ট জায়গায় আড়ত থাকলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়। আম প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে আরও লাভবান হওয়া যাবে। এইজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করার কথাও বলেন তারা।
পত্নীতলা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সোহারাব হোসেন বলেন, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে নওগাঁর পত্নীতলায় ৪ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমির বাগানে ৬৫ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২৬৩ কোটি টাকার আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে
মো. সোহারাব হোসেন আরও বলেন, খরাতে যেন আমের গুটি ঝরে না পড়ে সেজন্য বাগানে নিয়মিত সেচ দেওয়ার পাশাপাশি কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।