রাণীশংকৈলে স্ট্রবেরি চাষে যুবকের অভাবনীয় সাফল্য

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় চাষ হচ্ছে বিদেশি ফল স্ট্রবেরি। অল্প পুঁজি ও স্বল্প শ্রমে অধিক ফলন হওয়ায় বাংলাদেশে এখন পরিচিত হয়ে উঠেছে এই ফলটি। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ স্ট্রবেরি চাষ করে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের কৃষক ইসরাফিল হোসেন।
সরেজমিনে স্ট্রবেরি ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, স্ট্রবেরি পরিচর্যা ও বিক্রির জন্য স্ট্রবেরি তুলছেন কৃষক ইসরাফিল হোসেন। ওই এলাকায় নতুন এই ফলের চাষ দেখে অন্যরাও চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।
জানা যায়, স্ট্রবেরি বিশ্বের অনেক দেশেই চাষ করা হয়। চীন স্ট্রবেরির বৃহত্তম উৎপাদক দেশ। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, মিসর, তুরস্ক, স্পেন, রাশিয়া, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ইত্যাদি দেশে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে স্ট্রবেরির বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। সম্ভাবনাময়ী এ ফল সারা দেশে ব্যাপকভাবে চাষ করা হলে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
সাফল্য পাওয়ার বিষয়ে ইসরাফিল হোসেন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চারা এনে ৫০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেন তিনি। তার এই জমিতে প্রায় আট হাজার গাছ রয়েছে। এতে বীজ ও পরিচর্যা খরচসহ সবমিলিয়ে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড়লাখ টাকা। বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রতি কেজি ভালোমানের স্ট্রবেরির পাইকারি দাম প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এসে তার ক্ষেত থেকে স্ট্রবেরি নিয়ে যাচ্ছেন। এবার ৪০ থেকে ৫০ মণ ফলনের আশা করছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ৪ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন তিনি। আরও এক মাসের বেশি সময় তিনি স্ট্রবেরির ফলন পাবেন বলে আশা করছেন। সব মিলিয়ে সাত থেকে আট লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

অল্প পুঁজি ও কম শ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে বড় পরিসরে স্ট্রবেরি চাষের কথা জানান ইসরাফিল হোসেন। তিনি আরও জানান, অক্টোবরের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্ট্রবেরির চারা রোপণ করা যায়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফল আহরণ ও বিক্রি করা যায়।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাণীশংকৈল উপজেলাটি কৃষি সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে ফল ও সবজি খুব ভালো হয়। বর্তমানে ইসরাফিল হোসেন স্ট্রবেরি চাষে সফলতা পেয়েছেন। বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্ট্রবেরি চাষ কৃষি অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কৃষি বিভাগ তাকে সহায়তা দিয়েছে। তার সফলতা দেখে অন্য কৃষকরাও স্ট্রবেরি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমরা সবসময় কৃষকদের পাশে আছি।’