ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

রাজধানীর বড় বড় শপিং মলগুলোর মতো ফুটপাত মার্কেটগুলোতেও জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। আজ ২১ রমজান, ঈদের বাকি আট বা নয় দিন। শেষ মুহূর্তে পরিবারসহ কেনাকাটা করতে আসছেন অনেকেই।
হরেক পণ্যের সমাহার থাকায় ঈদের কেনাকাটায় গুলিস্তান এবং এর আশপাশে ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। আজ শনিবার (২২ মার্চ) এখানে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি পেশায় স্যানিটারি দোকানের সেলসম্যান। তিনি বলেন, ‘আমাদেরতো ভাই ইনকাম কম, বড় বড় মার্কেটে যাইতে পারি না। তাই ফুটপাত থেকেই কিনি। এখানে দামও কম, জিনিসও ভালা। বাচ্চাকাচ্চাদের জন্য মন মতো যেন নিতে পারি, তাই এখানে আসা।’
সরেজমিনে দেখা যায়, গুলিস্তানের এই ফুটপাতে হরেক রকমের পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। কী নেই এখানে! শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, শিশুদের পোশাক, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, শাড়ি, লেহেঙ্গা, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ঘড়ি, মানিব্যাগ, চশমা সবই মেলে। মাত্র ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় জিন্স-গ্যাবাডিং প্যান্ট, ১৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শার্ট পাওয়া যায়। পাঞ্জাবি মিলে ২৫০ থেকে ১০০০ টাকায়। ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যায় রঙ-বেরঙের টি-শার্ট।

গুলিস্তানের ফুটপাত মার্কেটে সবচেয়ে বেশি ক্রেতার দেখা মেলে শিশুদের দোকানগুলোতে। সরেজমিনে ছেলে ও মেয়ে শিশু উভয়ের পোশাকের দোকানগুলোতেই বেশ ভিড় দেখা যায়। মাত্র ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় পাওয়া যায় মেয়ে শিশুদের জামা।
বিক্রেতা আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমার এখানে সব নতুন নতুন কালেকশন। তাই কোনো কাস্টমার এলে ফিরে যায় না। আমি দামও রাখি কম। একটা জামায় ৫০ টাকা লাভ হলেই ছেড়ে দেই। যে কারণে দেখতেই পাচ্ছেন কাস্টমারের ভিড় বেশি।’

ক্রেতা মজিবুল হক বলেন, ‘তুলনামূলক দাম কম আছে। ৪০০ টাকা করে দুই মেয়ের জন্য দুটি জামা কিনেছি। দেখতে সুন্দর। মেয়েগুলো খুব খুশি হবে। এখন মেয়ের মার জন্য কিনলেই কেনাকাটা শেষ। নিজের জন্য শেষ দিকে কিনে নেব।’
যাত্রাবাড়ি থেকে আসা পারভিন আক্তার বলেন, ‘যাত্রাবাড়ির ওই দিক থেকে গুলিস্তানে দম কম। ভালো জিনিস পাওয়া যায়। তাই পাশের রুমের এই ভাবিকে নিয়ে আসলাম ছেলের জন্য শার্ট আর পাঞ্জাবি কিনতে। পাঞ্জাবি কিনেছে ৩০০ টাকা দিয়ে। এখন ২০০-৩০০ টাকার মধ্যে একটা শার্ট-প্যান্ট কিনবে।’
শুধু শিশুদের জামা-কাপড়ই নয় বড়দেরও সব ধরনের পোশাক পাওয়া যায় গুলিস্তানের এই ফুটপাত মার্কেটে। তেমনই এক ক্রেতা আশরাফ। তিনি বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যাবো আর কয়দিন পর। বাবা ও মা আছেন গ্রামে। তাদের জন্য কেনাকাটা করছি। বাবার জন্য লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি নিয়েছি। এখন মায়ের জন্য শাড়ি নেব। ফুটপাতে ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়, কেবল আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে আপনি ঠকবেন না।’

কেবল ক্রেতা নয়, সন্তুষ্টি দেখা গেছে বিক্রেতাদের মাঝেও। বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জিন্স প্যান্টের অনেক চাহিদা। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। বিকেল ও সন্ধ্যার পর বেচাকেনা একটু বেশি হয়। তখন মানুষ বাড়ে। চাঁদরাতের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাবে আশা করছি।’
গুলিস্তানের ফুটপাত মার্কেটে জামা-কাপড়ের মতো জুতার চাহিদাও অনেক। সব বয়সের সব রকম জুতা পাওয়া যায় এখানে। দোকানগুলোতে জুতার পসরা সাজানো। ভিড়ও আছে ক্রেতাদের। বিক্রেতারা জানান, একটু কম দামি জুতা বেশি বিক্রি হয়।