রপ্তানি বন্ধ করবে না ভারত, শুক্রবার বৈঠক
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধে ভারতের ব্যবসায়ীদের দেওয়া আলটিমেটামের জবাবে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের পক্ষ থেকে ভারতের হিলি এক্সপোর্টার অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বরাবর এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, ওই চিঠিতে আগামী শুক্রবার বিকেলে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখার কথা বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, করোনার টিকা ও সনদ ছাড়াই ভারতীয় ট্রাকচালক ও হেলপাররা দীর্ঘদিন ধরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য নিয়ে প্রবেশ করায় দেশে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয় এবং এ কারণে বন্দর এলাকায় সংক্রমণ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় ভারতীয় ট্রাকচালক ও হেলপাররা করোনা টিকা গ্রহণ করে তার সনদ নিয়ে যেন প্রবেশ করে, ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছে এই দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। তাই এক সপ্তাহ ধরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা কমিয়ে ৫০টি করা হয়। এর আগে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক আসত ১৫০ থেকে ২০০টির মতো।
সভাপতি আরও জানান, ভারতের ব্যবসায়ীরা এসব কারণে ঈর্ষান্বিত হয়ে গত রোববার চারটি শর্ত আরোপ করে আমাদের চিঠি দেয়। তারা জানায়, সব চালক ও হেলপারকে করোনার টিকার আওতায় আনা সম্ভব নয়। কারণ ভারতে করোনা টিকার সংকট রয়েছে। এটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। শর্ত মেনে পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে না। তাই তারা আগমীকাল বুধবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছি আগামী শুক্রবার বিকেলে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারতের হিলি এক্সপোর্টার অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ধিরাজ অধিকারী বাবাই বলেন, ‘আমরা চারটি শর্ত দিয়ে বলেছি-এই মুহূর্তে সব ট্রাকচালক ও হেলপারকে টিকা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ ভারতজুড়ে টিকার সংকট রয়েছে। আগের মতো সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি চালু রাখতে হবে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে একক সিদ্ধান্ত না নিয়ে উভয়পক্ষ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্য স্থলবন্দরের মতো হিলি স্থলবন্দরেও ট্রাক পারাপার স্বাভাবিক রাখতে হবে। এসব কারণ উল্লেখ করে আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়েছি। তারা আজ আমাদের চিঠির জবাব দিয়ে আগামী শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় স্থলবন্দর গেটে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক আহ্বান করেছে। দেখা যাক, ওই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। বিষয়টির সুরাহা না হলে শনিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে, হিলি স্থলবন্দরের কাস্টমস উপকমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি করবে বলে এখানকার আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। তবে আমি কোনো চিঠি পাইনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে।’