সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের নীলক্ষেত অবরোধ, ঢাকার ৭ পয়েন্টে অবস্থান
চলমান পরীক্ষাসমূহ নেওয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকার সাতটি মূল পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকালে নীলক্ষেতে অবস্থান নিয়ে সেখানে সড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা শহরের সাতটি মূল পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা সদরঘাটে অবস্থান নেবেন। বেগম বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থীরা বকশিবাজার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মোড়ে অবস্থান নেবেন, ইডেন ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত ও আজিমপুরে অবস্থান করবেন। বাংলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে মিরপুর টেকনিক্যাল ও গুলশানে অবস্থান নেবেন।
অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সবাইকে দায়িত্ববান ও সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সাত কলেজের ২০১৯ সালের স্নাতক চতুর্থ বর্ষ, ২০১৯ সালের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের লিখিত পরীক্ষা এবং ২০১৭ সালের মাস্টার্স শেষ পর্বের মৌখিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে বলে জানান তারা। এ ছাড়া পূর্বঘোষিত পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষ ও ১০ মার্চ থেকে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের (বিশেষ) পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
নীলক্ষেতে অবস্থান নেওয়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হাফিজ উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এই আন্দোলন সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেও নয়। আমাদের আন্দোলন আমাদের পরীক্ষা আদায়ের অধিকারের। আমাদের একদফা দাবি হলো- আমাদের পরীক্ষা নিতে হবে। কেননা আমাদের হল বন্ধের মধ্যেও আমরা গ্রাম থেকে এসে ঢাকায় এসেছি। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা স্থগিত করা এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের চরম ভুল সিদ্ধান্ত।’
হাফিজ উল্লাহ আরো বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি। সেটি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি আমরা চালিয়ে যাবো।’
সাত কলেজ সমন্বয়ক কমিটির অন্যতম নেতা একেএম আবু বকর বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে হঠাৎ করে কেন পরীক্ষা শুরু করল? কেনই বা এত শিক্ষার্থীদের ঢাকায় আনল? এখন কেনই বা মাঝপথে পরীক্ষা বন্ধ করে দিল? শিক্ষার্থীদের এই আর্থিক ক্ষতি কে পূরণ করবে? যেখানে করোনার প্রভাবে শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের হঠকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
একেএম আবু বকর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া হোক। সাত কলেজের চলমান পরীক্ষা সমূহ চলতি রুটিনে নিয়ে নেওয়ার দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত (ফোকাল পয়েন্ট) ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার গতকাল মঙ্গলবার বলেন বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণায় আমরা আলোচনা করে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সাত কলেজের একাধিক বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল। সেগুলো ২৪ মে পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। নতুন করে আবার পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক এ এস এস মাকসুদ কামাল মঙ্গলবার বলেন বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে সভা করেছি। তাদের পরামর্শে আমরা সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ২৪ মে থেকে ক্রম অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। এর আগে যেসব পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল। সেসব পরীক্ষাও ২৪ মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।’