গোপাল ভাঁড়ের গল্প
চোরের শিক্ষা
একদিন গোপালের জ্বর হওয়ায় সে সেদিন রাজসভায় যেতে পারেনি। মহারাজ সভাসদদের নিয়ে নানা আলাপ-আলোচনা করতে করতে হঠাৎ বললেন, আমার সভার মধ্যে এমন কি কেউ আছে, যে গোপালের ঘর থেকে কিছু চুরি করে আনতে পারে? যদি কেউ পারে, তবে সে সামান্য জিনিস হলেও আমি তাকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করব। তোমরা কেউ রাজি থাকলে বলো।
মহারাজের পুরস্কারের লোভেও কেউ রাজি হলো না গোপালের ঘরে চুরি করতে। কারণ, বড় চতুর সে। তার চোখে ধুলো দেওয়া সহজ নয়। ধরা পড়লে নাকানি-চুবানি তো খেতে হবেই, আর সে তার প্রতিশোধ একদিন না একদিন নেবেই নেবে এবং অশেষ দুর্গতির সীমা থাকবে না।
ভূপাল নামের এক লোক পুরস্কারের লোভে সেদিন মধ্যরাত্রে গোপালের বাড়িতে সিঁদ কেটে প্রবেশ করল। গোপাল আগে থেকেই রাজসভার কথা জানতে পেরেছিল, তাই সে লোভী লোকটাকে জব্দ করার জন্য তৈরি হয়ে রইল।
গোপাল পূর্বপ্রস্তুতিমতো একটা মানুষের বিষ্ঠাপূর্ণ কলসির ওপরে গোটা কতক টাকা রেখে দিয়েছিল এবং সেখানে নিজে একপাশে আত্মগোপন করে দাঁড়িয়ে রইল। লোকটি সিঁদ কেটে যখন ঘরের মধ্যে মাথা গলিয়ে ঢুকল, তখন দেখল যে সামনেই একটা টাকাভর্তি কলসি বসানো আছে। সে আর কালবিলম্ব না করে তাই মাথায় তুলে নিয়ে মনের আনন্দে রাজবাড়ির দিকে এগোতে যেতেই গোপাল ঢিল ছুড়ে ভূপালের মাথার কলসিটা ভেঙে দিল। কলসি চুরমার হয়ে সঙ্গে সঙ্গে লোকটির সারা শরীর বিষ্ঠাতে পূর্ণ হয়ে গেল। তখন ভোর হয়েছে। গোপাল বেরিয়ে বলল, কী বাবা, চুরি করা হলো?
মহারাজ পরে গোপালের মুখে এসব কথা শুনে বেশ মজা পেলেন।
(সংগৃহীত)