কোন আঙুলের কী নাম?
মানুষের একেক হাতে পাঁচটি করে আঙুল। পায়েও তেমনি। আঙুলগুলোর নাম তো জানোই—বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা ও কনিষ্ঠা। ইংরেজিতে বললে—থাম্ব, ইনডেক্স ফিঙ্গার, মিডল ফিঙ্গার, রিং ফিঙ্গার ও লিটল ফিঙ্গার।
মজার বিষয় হলো, চিকিৎসাবিজ্ঞানে আবার আঙুলগুলোর আলাদা-আলাদা নাম নেই। চিকিৎসাশাস্ত্রে সংখ্যা দিয়ে আঙুল চিহ্নিত করা হয়। বুড়ো আঙুল ১ নম্বর, তারপর পর্যায়ক্রমে কনিষ্ঠা আঙুল ৫ নম্বর। ওখানে অবশ্য আঙুলগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়- বুড়ো আঙুল এক রকম, বাকি চারটা আরেক রকম।
এখন প্রশ্ন হলো, এই পাঁচ আঙুলের পাঁচটা নাম কী করে এলো?
প্রথম আঙুলটিকে বাংলায় বলে বুড়ো আঙুল বা বৃদ্ধাঙ্গুলি। সম্ভবত আঙুলটি দেখতে বুড়োদের মতো বলেই এমন নাম দেওয়া হয়েছে। ইংরেজিতে আঙুলটিকে বলে থাম্ব।
দুই নম্বর আঙুল, মানে ইনডেক্স ফিঙ্গারের নাম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ইন্ডিকেটাস’ থেকে, যার অর্থ নির্দেশ করা। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেখাতে গেলে, এই আঙুল দিয়েই দেখায়। সে জন্য এই আঙুলকে ইংরেজিতে পয়েন্টার ফিঙ্গারও বলে। আরো বলে ফোরফিঙ্গার আর ট্রিগার ফিঙ্গার। বাংলা নামটি অবশ্য আরেকটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে। কারো ওপর তর্জন-গর্জন করার সময়, মানে কাউকে শাসানোর সময় সাধারণত এই আঙুল তার দিকে তাক করা থাকে। তাই এর নাম তর্জনী।
পরের আঙুলটার নাম মিডল ফিঙ্গার বা মধ্যমা কেন রাখা হলো, সেটা তো সহজেই অনুমান করা যায়। পাঁচটি আঙুলের মধ্যে এটা তিন নম্বর, মানে মাঝের আঙুল কিনা, তাই।
চার নম্বর আঙুলের নাম রিং ফিঙ্গার, এটি আঙুলদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত। রীতিমতো তারকা-আঙুল বলা যেতে পারে। প্রাচ্যে অবশ্য আঙুলটিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেওয়া হতো না। তাই এর সংস্কৃত নাম ছিল ‘অনামিকা’, মানে যার কোনো নাম নেই। বাংলাতেও সেই নামটিই রয়ে গেছে।
তবে পশ্চিমের দেশগুলোতে আগে মনে করা হতো, এই আঙুলের কিছু জাদুকরি ক্ষমতা আছে। তারা মনে করত, আঙুলটির সাথে হৃদয়ের সরাসরি যোগ আছে। আর তাই, তারা বিয়ে করার পর বিয়ের আংটি এই আঙুলে পরতো। এখন সেই রীতিটিই সারা বিশ্বে প্রচলিত হয়ে পড়েছে। আর সেই রীতি অনুযায়ী আঙুলটিকে এখনো রিং ফিঙ্গারই বলা হয়।
আর পাঁচ নম্বর আঙুলটি, মানে হাতের একদম ছোট্ট আঙুলটির নাম যে কনিষ্ঠা হবে, তা আর আশ্চর্য কী! ইংরেজিতেও ওর নাম লিটল ফিঙ্গার। অনেকে আবার আদর করে আঙুলটিকে পিংকি ফিঙ্গারও বলে।