চার বছর বয়সেই ক্রিকেটার!
চার বছর বয়সে একটি বাচ্চা আর কতটুকু বা বড় হয়? এই বয়সে সবাই তো মা-বাবার আদরে লুটোপুটি খায়, বড়জোর স্কুলের শিশু শ্রেণি বা কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হয়, দু-চারটা ছড়া শেখে, বাড়িতে বসে টিভিতে কার্টুন দেখে, এভাবেই চলে তাদের দিন। এই বয়সে কজনই বা ক্রিকেটের কী বোঝে? তবে অনেকে হয়তো প্লাস্টিকের বল-ব্যাট নিয়ে খেলে। তাই বলে রীতিমতো পেশাদার ক্রিকেটারদের মতো কাঠের বল ব্যাট দিয়ে খেলা, তাও আবার স্কুলের অনূর্ধ্ব-১২ দলে! ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি-নিউজে জানিয়েছে এমন এক মজার খবর।
শুনতে হয়তো বিস্ময়করই শোনায়, কিন্তু এমনই অসম্ভবকে সম্ভব করে অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে ভারতের এক স্কুলশিক্ষার্থী। চার বছরের এই বিস্ময়কর ক্রিকেটারের নাম শায়ান, দিল্লির সঙ্গম বিহারের হামদর্দ পাবলিক স্কুলের কেজি শ্রেণির ছাত্র সে। তিন বছর বয়সে ক্রিকেটের প্রতি অসাধারণ ঝোঁক নজর কাড়ে তার বাবা-মায়ের। তখন থেকেই টেলিভিশনের সামনে বসে শুধু ক্রিকেট খেলাই দেখত ছোট্ট শায়ান। শায়ানের বাবা আরশাদও একজন সাবেক ক্লাব ক্রিকেটার। ছেলের এই উৎসাহ দেখে তিনি তিন বছর বয়স থেকেই ছেলেকে নিয়ে নেটে প্র্যাকটিস করতে শুরু করেন। তাঁরই আগ্রহে স্কুল কর্তৃপক্ষও তাদের অনূর্ধ্ব-১২ দলে জায়গা করে দেয় শায়ানকে।
কোচ উত্তম ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যাট হাতে তার ডিফেন্স আর শট খেলার ধরন দেখেই শায়ানকে স্কুল দলে নির্বাচিত করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শায়ান আসলে বিস্ময়-বালক। বয়সে ছোট হলেও সে শুধু ব্যাট হাতে যেভাবে ডিফেন্স করে, যে ফুট মুভমেন্টে সে শট খেলে তা এককথায় অসাধারণ। এমনকি শচীনও এই বয়সে ক্রিকেট এতটা বুঝতেন না।’ তবে চার বছরের একটা ছেলেকে এ রকম বড়দের দলে নেওয়াতে তো ঝুঁকি থাকতে পারে, স্কুল কর্তৃপক্ষও প্রথমে তেমনই মনে করেছিল। এ বিষয়ে তার বাবা বলেন, ‘আমার পরিবার ও বন্ধুদের অনেকে বলত আমি শায়ানকে নিয়ে শুধু শুধু সময় নষ্ট করছি। কিন্তু তাদের কেউ যখন নেটে ওর ব্যাটিং দেখেছে, সেই বলেছে শায়ান অনূর্ধ্ব-১২ দলে খেলার যোগ্য।’
এখন শায়ান অনূর্ধ্ব-১২ দলে খেলছে, তাই তার বাবাও ছেলেকে নিয়ে গর্বিত। ‘আমি ক্রিকেটকে উপভোগ করতে চাই, অনেক খেলতে চাই। আমি ফিল্ডিংও অনেক পছন্দ করি’, বলেছে ছোট্ট শায়ান। শায়ানের স্বপ্ন, বড় হয়ে বিরাট কোহলির মতো বড় ক্রিকেটার হওয়া।