জমে উঠেছে রাজধানীর ইফতার বাজার

Looks like you've blocked notifications!
ইফতারির দোকান থেকে ইফতার কিনছেন ক্রেতারা। ছবিটি রাজধানীর মোহম্মদপুর থেকে তোলা। ছবি : রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ

ইফতারির আয়োজনে নানা রকম মুখরোচক খাবার না থাকলে ইফতার যেন পরিপূর্ণ হয় না। কেউ কেউ বাড়িতে বাহারি ইফতার তৈরি করলেও বেশিরভাগ মানুষ ইফতার কিনতে ভিড় করেন ইফতারের দোকানগুলোতে। ফুটপাত থেকে আরম্ভ করে অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোতে দোকানিরা নানা রকম ইফতার বিক্রি করে থাকেন।

এদিকে, এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রোজা অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে জমে উঠেছে ইফতার বাজার। দুপুরের পর থেকে দোকানিরা সাজিয়ে বসেন বিভিন্ন রকম ইফতারির পসরা। আর এসব দোকান থেকে ইফতার কেনার জন্য লম্বা লাইন দিয়ে থাকে। রাজধানীর কয়েকটি ইফতার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি কিংবা পুরান ঢাকার চকবাজার—সব জায়গাতেই এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব দোকানে নিজস্ব ইফতারের ব্যবস্থা থাকার পাশাপাশি রয়েছে বাসায় নিয়ে যাওয়ার সুব্যবস্থা। চাইলে কেউ রেস্তোরাঁয় বসে ইফতার করতে পারেন। আবার কেউ প্যাকেট করে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। রোজাদারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ দুই ধরনের ব্যবস্থা করেছে রেস্তোরাঁগুলো।

ইফতারের মধ্যে রয়েছে ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, আলুর চপ, ডিম চপ, ঘিয়ে ভাজা বোম্বে জিলাপি, চিকেন রেশমি কাবাব, সুতি কাবাব, তেহারি, ফালুদা, খাসির পায়ের রোস্ট, আস্ত মুরগির রোস্টসহ বিভিন্ন রকমের মুখরোচক খাবার। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন রকমের পানীয় শরবত। দোকানভেদে এগুলোর দাম ভিন্ন। পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ প্রতি পিস পাঁচ টাকা, ডিম চপ ১০ টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট ৭০০-১০০০ টাকা, পাখির রোস্ট ৭০-১০০ টাকা, খাসির পায়ের রোস্ট ৩০০-৪০০ টাকা।  

মোহাম্মদপুরে প্রতিবছর রমজান মাস এলে ইফতারি বিক্রি করেন আবদুল মতিন। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এবারের ইফতার বিক্রি সম্পর্কে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কেবল তো রোজা কয়েকটা চলে গেল। বেচা-বিক্রি ভালো। তবে মাঝেমধ্যে বৃষ্টিতে একটু সমস্যা হচ্ছে। ক্রেতারা আসতে পারছে না।’

কারওয়ান বাজারের ইফতারি বিক্রেতা সাদ্দামকে প্রশ্ন করা হলো ইফতার আইটেম সম্পর্কে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৮-১০ রকমের ইফতারি বিক্রি করছি। বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমাদের এখানে ঘিয়ে ভাজা জিলাপিটা বেশি চলছে।’

একটি বেসরকারি চ্যানেলে চাকরি করেন সাদিয়া জাহান। অফিস থেকে ফেরার পথে প্রতিদিন বাসার জন্য ইফতার কিনে নিয়ে যান। দোকান থেকে কেন ইফতার ক্রয় করেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সারা দিন রোজা রেখে বাসায় গিয়ে ইফতার বানানো সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়ে দোকানই ভরসা।’ কিন্তু এগুলো তো অস্বাস্থ্যকর। তিনি বলেন, ‘জানি। কিছু করার নেই। ব্যস্ত জীবনে এসব জেনেও খেতে হয়।’

রমজানকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের এমন ইফতার-বিলাস চলবে পুরো এক মাস। রেস্তোরাঁ কিংবা ফুটপাতের পাশের দোকানগুলোতে তৈরি করা এসব ইফতার স্বাস্থ্যকর না হলেও রোজার মাসে তাও অনেকে এসব জায়গা থেকেই খাবার কেনেন। মুখরোচক খাবারের কাছে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়ে পড়ে। রাস্তা থেকে ইফতারির খাবার কেনার চেয়ে তা ঘরে তৈরি করলেই বেশি ভালো। অনেকে অবশ্য নিরুপায় হয়েই রাস্তা থেকে খাবার কেনেন। সে ক্ষেত্রে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষেরও উচিত শুধু রোজার মাসে নয়, বছরজুড়েই তাদের সচেতন থাকা জরুরি যেন খাবার থেকে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি না হয়।