বইয়ের সঙ্গে কফিতে চুমুক

Looks like you've blocked notifications!

কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর না থাকলেও সে আড্ডা একটু ভিন্ন আঙ্গিকে কফি ও বইয়ের সমন্নয় করে জমে উঠেছে নারডি বিন কফি হাউজে।

ব্যস্ত ঢাকা শহরে সবাই ব্যস্ত। জীবন চলার পথে শত ব্যস্ততার মাঝে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে, নিরিবিলি একটু সময় কাটাতে বা আপনজনের সঙ্গে বসে একটু গল্প করতে প্রয়োজন কফি হাউজের। কফিভর্তি মগে চুমুকে চুমুকে শেষ হবে সময়, গল্প হবে, আর এর সঙ্গে যদি নিজের প্রিয় লেখকের প্রিয় বইটি থাকে, তবে তো আর কথাই নেই, ছুটি নেবে সকল ব্যস্ততা, ক্ষণিকের জন্য হলেও।

এমনই এক কফি হাউজের সন্ধান মিলল রাজধানীর বুকে। ধানমণ্ডির ২ নম্বর রোডের আহমেদ অ্যান্ড কাজি টাওয়ারের নিচতলায় অবস্থিত এই ব্যতিক্রমধর্মী কফি হাউজটি। প্রথমে ঢুকলেই আপনি ভড়কে যাবেন, ভাববেন এটা কফি হাউজ না লাইব্রেরি? চারদিকে বড় বড় সেলফ, তাতে সাজানো রয়েছে দেশি-বিদেশি নামকরা লেখকদের ৯০০টির বেশি বই। হরকে রকমের বইয়ের সঙ্গে এখানে রয়েছে হরেক রকমের কফি।

নিরিবিলি এই কফি হাউজে ৪০টির মতো ছোট-বড় টেবিল রয়েছে। সন্ধ্যার সময় সব টেবিলই ছিল আড্ডায় মুখর। কেউ কফিতে চুমুক দিচ্ছেন, কেউ বই পড়ছেন, কেউ বা তার প্রয়োজনীয় বই থেকে নোট নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চুটিয়ে গল্প করছেন বন্ধুর সঙ্গে।

এই ব্যতিক্রম ধরনের কফি হাউজের প্রতিষ্ঠাতা মাসরু হাসান কমল ও ফারিয়া মেহজাবিন। যুক্তরাজ্য থেকে এমবিএ শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেই উদ্যোক্তা হন মাসরু হাসান কমল। তাঁদের হাত ধরে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে এই কফি হাউজের যাত্রা। এই অল্প সময়েই কফি হাউজটি গ্রাহকদের মন জয় করেছে।

মাসরু হাসান কমল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি সব সময় সবার থেকে আলাদা কিছু করতে পছন্দ করি। আর এই ভিন্ন ধারণা থেকেই ব্যতিক্রম ধরনের কফি হাউজ তৈরি করেছি। প্রথম দিকে গ্রাহকের আগমন যতটুকু চেয়েছিলাম, তার থেকে বেশি পাচ্ছি।’

মাসরু আরো বলেন, ‘বইয়ের সংখ্যা আরো বাড়াব এবং বই বাসায় নেওয়ার জন্য খুব শিগগির সদস্য গ্রহণ শুরু করব। প্রত্যেক সদস্য একটি বই পাঁচ দিনের জন্য নিতে পারবেন।’ গ্রাহকের চাপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই কফি হাউজের জায়গা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান মাসরু হাসান।

নারডি বিন কফি হাউজে কফি খেতে আসা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্র আরিফ বলেন, ‘আমি আগে এই ভবনের চারতলায় একটি কফি হাউজে কফি খেতাম। কিছুদিন হলো এই কফি হাউজের সন্ধান পেলাম। আমি বই পড়তে ভালোবাসি। আর এখানে অনেক বইয়ের সংগ্রহ আছে, তাই আমি এখানে কফি খেতে আসি।’

কফি খেতে আসা মোহাম্মদ জুয়েল বলেন, ‘এখানকার পরিবেশটা আমার ভালো লাগে এবং কম মূল্যে ভালো মানের কফি পাওয়া যায়। তাই আমার মাঝেমধ্যে আসা হয়।’

এই কফি হাউজে ৩৫ ধরনের কফি পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৭৫ টাকার মধ্যে আপনি এখানে কফি পান করতে পারবেন। বই পড়ার জন্য কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয় না।