জ্যোতিষীর চোখে

নতুন বছরে কোন দিকে যাবে বিশ্ব?

Looks like you've blocked notifications!

২০১৯ সালের শুরুতে নানাবিধ অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলির কারক গ্রহ ইউরেনাস অগ্নিরাশি মেষে অবস্থান করছে। রাহু ও কেতু যথাক্রমে জলজ রাশি কর্কটে এবং মৃত্তিকা রাশি মকরে থাকবে। চন্দ্র ও শুক্র অবস্থান করবে বায়ু রাশি তুলায়। বুধ ও বৃহস্পতি রয়েছে জলজ রাশি বৃশ্চিকে। প্লুটো, শনি ও রবি রয়েছে অগ্নিরাশি ধনুতে। নেপচুন বায়ু রাশি কুম্ভে এবং মঙ্গল আছে জলজ রাশি মীনে।

উপরিউক্ত গ্রহাবস্থানের ফলে বছরটি বিশ্ববাসীর জন্য সামগ্রিকভাবে শুভাশুভ মিশ্র সম্ভাবনাময়। অগ্নিরাশি মেষে ইউরেনাসের অবস্থানের ফলে বিশ্বের নানা স্থানে অগ্নিকাণ্ডসহ নানাবিধ অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলি ঘটার আশঙ্কা আছে। তা ছাড়া শনি, প্লুটো, রবি একসঙ্গে অগ্নিরাশি ধনুতে অবস্থানের ফলে এই আশঙ্কা আরো বৃদ্ধি করবে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, কলকারখানাসহ জনবহুল স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ফলে জনমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। কোনো কোনো অঞ্চলে এক ধরনের অঘোষিত যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জল, স্থল ও অন্তরীক্ষে দুর্ঘটনার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। একাধিক দেশে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পরিবর্তনের যোগ আছে। বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্পসহ বিবিধ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী সমস্যা প্রকট হয়ে উঠতে পারে। মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীর অপতৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

বিবিধ আন্তরাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা স্পষ্টত গৌণ হয়ে উঠবে। মার্কিন রাজনীতিতে রিপাবলিকানদের জনপ্রিয়তাও হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা আছে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশসমূহের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মার্কিন নীতির পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ণবাদী চিন্তা-চেতনার ফলে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর ভেতরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে কিশোরদের ভেতরে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। রুশ-মার্কিন সম্পর্ক একই রকম থকবে বলে আশা করা যায়। আন্তরাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে চীন-মার্কিন বৈরিতা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

রাশিয়া

রাশিয়ার আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার নীতিগত পরিবর্তন প্রক্রিয়া জোরদার হবে। ফলে রুশ অর্থনীতিতে পুঁজিবাদের বিকাশ স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ বছরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবেন বলে আশা করা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে রাশিয়ার ভূমিকার তেমন কোনো পরিবর্তন আশা করা যায় না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিবিধ দেশে জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে রাশিয়ার জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে।

চীন

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনের গুরুত্ব অতীতের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে। পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে স্পষ্ট করার প্রচেষ্টা জোরদার করতে পারে। চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। চীনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এ বছর উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

ভারত

ভারতের আর্থসামাজিক উন্নতি অব্যাহত থাকবে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিজেপি সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা আছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারত এ বছর অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়। অঞ্চলবিশেষে  সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নবর্ণ তথা দলিত হিন্দুরা কোথাও কোথাও সহিংসতার শিকার হতে পারে। এ বছর বিবিধ ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। যুবসমাজের ভেতরে হতাশা ও অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ভারতের তিন বা ততোধিক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের জীবনাবসানের আশঙ্কা আছে।

আরব ও মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্য অনেক দেশেই এক ধরনের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করতে পারে। তেলসমৃদ্ধ দেশসমূহের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। রাজতন্ত্রশাসিত দেশসমূহের মধ্যে জনঅসন্তোষ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সরকার ও জনগণের সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো সম্ভাবনা নেই। সৌদি রাজপরিবারের অন্তর্বিরোধী কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রকাশ্যরূপ পরিগ্রহ করতে পারে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরকারবিরোধী মনোভাব কোথাও বিক্ষোপের রূপ নিতে পারে। ইরানের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকবে। আরব অঞ্চলের শাসকদের পারস্পরিক বিরোধ প্রকাশ্য রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। ইয়েমেনের বিরাজিত যুদ্ধাবস্থা দ্রুত সমাধানের তেমন একটা সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এ অঞ্চলে দুর্ভিক্ষাবস্থা দেখা দিতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের শাসকদের ভেতরে পারস্পরিক মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দের ফলে আস্থাহীনতার সংকট বিরাজ করবে। ফলে শান্তি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও কমবেশি থেকেই যাবে।