কীভাবে সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার বন্ধু হয়ে উঠবেন?
প্রেমময় সম্পর্ক মানেই দুই সঙ্গীর একে অন্যকে আঁকড়ে থাকা। শরীর-মনের নিবিড় বন্ধন আজীবন অটুট রাখা। এমনটাই আমরা ভেবে থাকি। কিন্তু সেই মধুর সম্পর্কে ছেদ পড়তে পারে। হতে পারে বেদনাদায়ক, হৃদয়ভঙ্গকারী। হয়ে যায় দুজনের বিচ্ছেদ। কিন্তু ব্রেকআপের পরও তো হৃদয়ের কোনো এক কোণে জেগে থাকে সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার জন্য একটু টুকরো চর! দীর্ঘদিনের সম্পর্ক কি এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়? আর তাই তাঁর সঙ্গেই হতে পারে বন্ধুত্ব।
যদিও ব্যাপারটা এত সোজা নয়। অনেকেই ভাবেন, একবার প্রেমময় সম্পর্কের পর আর কখনো কি বন্ধু হওয়া যায়? নানা মুনির নানা মত। বিচ্ছেদের পর সাবেক প্রেমিক-প্রেমিকার গভীর বন্ধুত্বের অনেক উদাহরণই রয়েছে।
তাই বিচ্ছেদ হওয়া চাই পারস্পরিক সম্মতিতে, মনেপ্রাণে কোনো প্রকার কালোরক্ত না রেখেই। জীবনের প্রেমপর্বটা মধুর, সেই কথা স্মরণ রেখেই সবার উচিত বিচ্ছেদপর্বটা যেন তিক্ত না হয়। সিদ্ধান্ত যেন চটজলদি না হয়। যা-ই হোক, পরস্পরের সম্মতিতে হোক। আর এটা হলেই বিচ্ছেদের পর যদি বন্ধু হতে চান, তবে একধাপ এগিয়ে থাকবেন।
সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার বন্ধু হয়ে ওঠার সেরা পাঁচটি পরামর্শ জেনে নিন :
হালকা চালে আলাপ করুন
আপনারা আর সঙ্গী নেই। তাই খুব বেশি কথা বলারও দরকার নেই। অর্থাৎ সাবেকের সঙ্গে নিজের সব কথা ভাগাভাগি করার প্রয়োজন নেই। মনে রাখা দরকার, এসব আমরা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির সঙ্গেই করে থাকি। চাই আবেগ নিয়ন্ত্রণ। তাই সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে অল্প কথা বলুন। যা বলবেন প্রফুল্লচিত্তেই বলবেন। কৌতুকও করতে পারেন। হাসিঠাট্টা উপভোগ করতে পারেন।
অতীত ঘাঁটবেন না
সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চাইলে ভুলেও অতীতের মধুর দিনগুলো স্মরণ করবেন না। সেই স্মৃতি উসকে দেবেন না। কারণ এতে আবার পুরোনো আবেগ ফিরে আসতে পারে। উঁকি দিতে পারে বেদনাবোধ। স্মৃতিকাতর হয়ে পড়তে পারেন দুজনই। আর পুরোনো স্মৃতি বারবার মনে এলে কখনোই সাবেকের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর বন্ধুত্ব হবে না।
অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করবেন না
বন্ধুর সঙ্গে কি আপনি শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন? তো, এখন কেন এই ভুল করতে চাইবেন? সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চাইলে অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করবেন না। হয়তো মুহূর্তের কাছে আপনি আত্মসমর্পণ করতে পারেন, তবে তা ঠিক নয়। স্মরণ করুন, ঠিক কী কারণে আপনাদের বিচ্ছেদ হয়েছিল। সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চাইলে অবশ্যই আপনাকে সীমানার ভেতরে থাকতে হবে।
ব্যক্তিসীমানায় ঢুঁ মারবেন না
যেহেতু সাবেক সঙ্গীর সাথে আপনার প্রেমময় সম্পর্ক নেই, তাই তাঁর ওপর আগের মতো অধিকার খাটাতে পারেন না নিশ্চয়ই! সাবেকের ব্যক্তিগত সীমানা আছে। সেখানে ঢুঁ মারবেন না। সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকা যদি নতুন সম্পর্কে জড়ান, তবে তাতে সায় দিন। তাঁদের শখ, নতুন দক্ষতা সম্পর্কে জানুন। ব্যক্তিস্বাধীনতায় খবরদারি না করে দুজনের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য গড়ে উঠতে সহায়তা করুন।
ফেরার চেষ্টা নয়
সাবেক সঙ্গীর প্রতি অনুভব জাগরূক থাকলেও ফেরার চেষ্টা না করাই ভালো। প্রত্যেক সম্পর্কের ভিত্তিই হলো আস্থা। সাবেক বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে নতুন বন্ধুত্ব গড়তে গেলে আস্থা জরুরি। তাই পুনরায় ফেরার চেষ্টা নতুন সম্পর্ককে অস্বাস্থ্যকর করে তুলবে।
সম্পর্কের সম্বোধন যা-ই হোক, সেটাকে স্বাস্থ্যকর রাখা জরুরি। যদি সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুস্থ না হয়, তবে তা থেকে সরে যাওয়াই উত্তম। সূত্র : ইন্ডিয়া টিভি