বাণিজ্যমেলা

ভালোই বিক্রি হচ্ছে বিদেশি পণ্য

Looks like you've blocked notifications!
মেলার বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোয় গিয়ে হতাশ দর্শনার্থীরা। ছবি : সৈয়দ অয়ন

দেশে বসে বিদেশি পণ্য কেনার অন্যতম আয়োজন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এবার বাণিজ্যমেলায় বিশ্বের ২১টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। এগুলো হলো— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, মরিশাস, ঘানা, নেপাল, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

গতকাল বুধবার মেলা প্রাঙ্গণে এসব দেশের প্যাভিলিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এক দেশের প্যাভিলিয়নে আরেক দেশের পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। যেমন মালয়েশিয়া প্যাভিলিয়নে চীনা পণ্য প্রদর্শন করছে হাইড্রোলিক লিমিটেড নামে একটি দেশি প্রতিষ্ঠান। নেপাল প্যাভিলিয়নে পাকিস্তান ও ভারতীয় পণ্য প্রদর্শন করছে স্টার এন্টারপ্রাইজ। আবার বেশ কিছু বিদেশি প্যাভিলিয়নে দেশি পণ্যসামগ্রীও দেখা গেছে। 

তবে বিদেশি এই প্যাভিলিয়নগুলোর মধ্যে বেশ কিছু প্যাভিলিয়ন নিজ নিজ দেশের পণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। তুর্কি প্যাভিলিয়নে কার্পেট প্রদর্শন করছে দেশটির বিখ্যাত কার্পেট উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হেডেক্স হালি ডেরি। প্রতিষ্ঠানটির কান্ট্রি ম্যানেজার হালেফ ওজকুরট বলেন, ‘প্রতিবছর তাঁর প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নেয়। এখানকার মানুষ তুর্কি কার্পেট খুবই পছন্দ করেন।’ এবারের মেলায় তাঁর প্রতিষ্ঠান সিনথেটিক ও উলের কার্পেট এনেছে। নতুন নতুন এ কার্পেটের প্রতি ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে বলেও তিনি জানান।

থাইল্যান্ড প্যাভিলিয়ন সাজানো হয়েছে নানা ধরনের শুকনো খাবার, চকলেট, তেঁতুল, থাই লাইট ও বেশ কিছু ব্যাগ দিয়ে। তবে এই প্যাভিলিয়নে থাইল্যান্ডের ২২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কাছে থাই পণ্য জনপ্রিয় হওয়ায় বিক্রিও ভালো হচ্ছে। নতুন নতুন খাদ্যপণ্যসামগ্রী অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে।’ থাইল্যান্ডের প্যাভিলিয়নে আরো রয়েছে বিভিন্ন কসমেটিকস, নানা ধরনের ফ্যাশন সামগ্রী, রূপচর্চার পণ্য এবং শুকনো খাবার।

এদিকে, মেলার বিদেশি অন্য প্যাভিলিয়নগুলোয় গিয়ে হতাশ দর্শনার্থীরা। কারণ, এক দেশের প্যাভিলিয়নে আরেক দেশের পণ্য প্রদর্শন হচ্ছে। আবার দেশি পণ্যও দেখা যাচ্ছে। এতে ক্রেতারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ স্বীকার করে জানানো হয়, পাকিস্তান ভিসা জটিলতার কারণে আসতে পারেনি। শ্রীলঙ্কা আসার কথা ছিল, এখনো কেন আসেনি সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে আরো জানা যায়, পাকিস্তানি কোনো ব্যবসায়ী বা কর্মকর্তা ঢাকায় আসতে পারেননি। কিন্তু মেলায় আনার জন্য তাঁদের পণ্যগুলো আগেই এসে গেছে। এখন ওই সব পণ্য পাকিস্তানি প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশিরা বিক্রি করছেন। যে কারণে প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নাজুক। 

মেলায় অনেক ভারতীয় ব্যবসায়ী এলেও যাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, তাদের অনেকেই আসেননি। ফলে তাদের স্টলগুলোয় দেশি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কোরিয়ান ব্যবসায়ীরা আরো বেশি প্যাভিলিয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। ফলে তাদের ১৫টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবার অংশগ্রহণ করেনি।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশিদের নামে বরাদ্দ প্যাভিলিয়নগুলোর মধ্যে এখনো কয়েকটির অনেক কাজ বাকি। আবার কোনো কোনো প্যাভিলিয়নের কাজ শেষ হলেও স্টল বরাদ্দ হয়নি। মরিশাসভিত্তিক রাজস্থানি পণ্যের প্যাভিলিয়নের মালিক নরেন্দ্র জেন বলেন, ‘কতগুলো স্টল পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা আগেই বরাদ্দ নিয়ে রেখেছিলেন; কিন্তু তারা ভিসা না পাওয়ায় আসতে পারেননি। এখন সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছেন।’

কোরিয়ান প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ দীপু সাহা বলেন, ‘আমরা অনেক যোগাযোগের মাধ্যমে বিদেশি ব্যবসায়ীদের এ দেশে মেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহী করি। এ ক্ষেত্রে আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানের উচিত বিদেশি ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া। একবার বিদেশি ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিলে মেলা আর আন্তর্জাতিক মানের থাকবে না।’