সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ভূমিমন্ত্রীর ছেলে কারাগারে
পাবনার রূপপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ভূমিমন্ত্রীর ছেলে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। মামলার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তার গাড়িতে করে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান মিন্টুর সঙ্গে তমাল আদালত চত্বরে আসেন।
একই সময় ভূমিমন্ত্রীর ছেলেসহ সব আসামির গ্রেপ্তার দাবিতে পাবনা টাউন হল ময়দানে জেলার সাংবাদিকদের সমাবেশ চলছিল। ওই সময় খবর আসে ভূমিমন্ত্রীর ছেলের জামিন বাতিল হয়েছে। এ খবর শুনে সাংবাদিকরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।
পুলিশ জানায়, দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে পাবনার আমলী আদালত-১ এ হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন ভূমিমন্ত্রীর ছেলে তমাল শরীফ। আদালতের বিচারক অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম রেজাউল করিম জামিন নামঞ্জুর করেন এবং তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ভূমিমন্ত্রীর ছেলে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালসহ সব আসামিকে গ্রেপ্তার ও আসামিদের দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে বুধবার পাবনা টাউন হল ময়দানে জেলার সাংবাদিকরা সমাবেশ করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে এবং পুলিশ সুপারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন।
গত ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের আণবিক চুল্লি বসানোর প্রস্তুতির খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রীপুত্র শিরহান শরীফ তমাল ও তার ক্যাডার বাহিনীর হামলায় পাবনার চার সাংবাদিক গুরুতর আহত হন।
পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ও বিটিভি প্রতিনিধি আব্দুল মতীন খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান শহীদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন পাবনা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা দেশবরেণ্য কলামিস্ট সাংবাদিক রণেশ মৈত্র, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি, পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, পাবনা সাংবাদিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডেইলি স্টার প্রতিনিধি তপু আহমেদ, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি মীর্জা আজাদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, আমিরুল ইসলাম রাঙা, পাবনা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি হাসান আলী, পাবনা ইয়াং জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রনি ইমরান, আহত সাংবাদিকদের পক্ষে রিজভী রাইসুল ইসলাম জয়, ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি বিকাশ কুমার চন্দ, চাটমোহরের হেলালুর রহমান জুয়েল, ফরিদপুরের আব্দুল বাছিদ, আটঘরিয়ার মো. আবদুস সাত্তার, সাঁথিয়ার অধ্যাপক আব্দুদ দাইয়েন, সুজানগরের আব্দুল আলিম রিপন, শুকুর আলী, মোহাম্মদ আলী, বেড়ার মো. লুৎফর রহমান, ঈশ্বরদীর সেলিম আহমেদ, আতাইকুলার অলিউর রহমান অলি, সাঁথিয়ার মানিক রানা, খালেকুজ্জামান পান্নুসহ পাবনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।
পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে এবং পুলিশ সুপারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন সাংবাদিকরা। পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
প্রবীণ সাংবাদিক রণেশ মৈত্র বলেন, ক্ষমতা অপব্যবহারের জন্য জনগণ তাদের ক্ষমতা দেয়নি। তিনি সাংবাদিকদের ওপর হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।