ডিএনসিসির ভোট বানচাল ইসি ও সরকারের পূর্বপরিকল্পিত : বিএনপি
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর হঠাৎ করেই হাইকোর্টে রিট দায়ের, একদিন পরেই রিটের নিষ্পত্তি করে তিন মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা—এসবের পেছনে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ‘পূর্বপরিকল্পনা’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
রাজধানীর সদ্যবিলুপ্ত ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের রিটের নিষ্পত্তি করে রুলসহ ডিএনসিসির নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। গতকাল মঙ্গলবারই রিটটি আদালতে উঠলে শুনানি শেষে আজকের জন্য আদেশের দিন রাখা হয়েছিল।
আদেশের পর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘মূলত ডিএনসিসি নির্বাচন বানচাল করা পূর্বপরিকল্পিত নীলনকশা, এটি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ প্রযোজনা।’
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ত্রুটিপূর্ণ তফসিলের কারণেই সংক্ষুব্ধরা রিট করার সুযোগ পেয়েছেন। আমরা বারবার বলে আসছি, নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সিইসি আওয়ামী লীগের মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ। ডিএনসিসিসহ ঢাকা সিটিতে যদি সুষ্ঠু ভোট হয়, তাহলে ক্ষমতাসীনদের ভরাডুবি হবে, এটা সরকারি দল নিশ্চিত জানে। গণমাধ্যমেও এ রকম খবর বেশ কয়েক দিন ধরে প্রকাশিত হচ্ছে।’
‘এ ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও এ বছর হওয়ার কথা। তাই ঢাকা সিটিতে বিপুল ভোটে পরাজিত হলে আওয়ামী লীগের জাতকুল কিছুই থাকবে না। তাই সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন আইনি ত্রুটি রেখে এ তফসিল ঘোষণা করেছে। এটা সরকারেরই নীলনকশার একটা অংশ।’
সরকারের নির্দেশেই নির্বাচন কমিশন আইনি ত্রুটি রেখে এ তফসিল ঘোষণা করেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘এটা সরকারেরই নীলনকশার একটা অংশ।’
গত ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “এখন যিনি প্রার্থী হবেন, তিনি জানেন না তিনি ভোটার কি না। তা ছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে এটা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৫(৩) উপধারা অনুযায়ী ‘মেয়রের পদসহ কর্পোরেশনের শতকরা ৭৫ ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, কর্পোরেশন, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে’। এ আইনমতে, উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড মিলে কাউন্সিলর শতকরা ৭৫ ভাগ হয় না। কারণ নতুন ১৮টিতে তো নির্বাচনই হয়নি। তা ছাড়া সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে যাঁরা কাউন্সিলর হবেন, তাঁরা কত দিনের জন্য নির্বাচিত হবেন। তাঁরা কি পাঁচ বছরের জন্য হবেন, না আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। তা নির্ধারণ করেননি কমিশন। এসব ত্রুটির কারণেই রিট করার সুযোগ পেয়েছেন সংক্ষুব্ধরা।’