রোহিঙ্গাদের জন্য আরো ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য আরো চার কোটি চার লাখ মার্কিন ডলার তহবিল ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে এই ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড)। এর আগেও ২৫৫ মিলিয়ন ডলার সাহায্য করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সংবাদ সম্মলনে ইউএসএইডের প্রশাসক মার্ক গ্রিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন প্রত্যাশা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, অভিবাসন এবং শরণার্থী বিষয়ক উপসহকারী মন্ত্রী মার্ক স্টোরেলা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ভূমির অধিকার ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। রোহিঙ্গা স্বাধীনভাবে বসবাসের অধিকার দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের এসব অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সেচ্ছায় প্রত্যাবাসন করতে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর কি ধরনের সহিংসতা এবং নির্যাতনের সংঘটিত হয়েছে, তার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে ন্যায় বিচারের জন্য কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যাবার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে দুপুরে বিমানে করে কক্সবাজার পৌঁছেন এই প্রতিনিধিদল। এরপর কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ট্রানজিট ক্যাম্পে যান। পরে তাঁরা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এরপর বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএসএইডের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বিভিন্ন প্রোগ্রাম সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
নতুন অর্থসহায়তার ফলে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সৃষ্ট সংকটে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি। আর ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে মিয়ানমার ও সেখান থেকে পালিয়ে আসা জনগোষ্ঠীর জন্য মোট মানবিক সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অধিক।
নতুন তহবিলের মাধ্যমে কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাসরত শরণার্থীদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা এবং মিয়ানমারের রাখাইন, শান ও কাচিন রাজ্যে চলমান সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে।